চট্টগ্রামে শিশু ধর্ষণের পর হত্যা: ৮ জনের ফাঁসি
২০১৮ সালে চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় ৯ বছর বয়সী শিশু ফাতেমা আক্তার মীমকে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ৮ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো জমিউল হায়দার এ রায় দেন। এতে ৮ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। একই সাথে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করে আদালত।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি এম এ নাসের বলেন, 'ফাতেমা আক্তার মীম হত্যাকাণ্ডের সকল আসামিকে আদালত মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ৭ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। তবে একজন পলাতক রয়েছে। এ মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীসহ গুরুত্বপূর্ণ ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।'
মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. বেলাল হোসেন ওরফে বিজয় (১৮), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে রুবেল (১৬), মো. হাছিবুল ইসলাম ওরফে লিটন (২৬), মো. আকসান মিয়া প্রকাশ হাসান (১৮), মো. সুজন (২০), মো. মেহেরাজ প্রকাশ টুটুল (৩২), আয়শা মমতাজ মহলের কেয়ারটেকার মনিরুল ইসলাম মনু (৪৯) ও শাহাদাত হোসেন সৈকত (১৯)। এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেন সৈকত পলাতক।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানাধীন বিশ্ব কলোনি এলাকার 'আয়শা মমতাজ মহল' নিয়ে গিয়ে মীমকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মীম আকবর শাহ থানাধীন ফাতেমাতুজ জোহরা হেফজুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসার ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে আকবরশাহ বিশ্ব ব্যাংক কলোনির 'আয়শা মমতাজ মহল'এর ছয় তলার ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির পাশ থেকে মীমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় পরদিন ওই বছরের ২২ জানুয়ারি মীমের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
পরে ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি মামলার পাঁচ আসামি মো. বেলাল হোসেন ওরফে বিজয় (১৮), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে রুবেল (১৬), মো. হাছিবুল ইসলাম ওরফে লিটন (২৬), মো. আকসান মিয়া ওরফে হাসান (১৮) ও মো. সুজন (২০) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মূলত মীমের মায়ের সঙ্গে আসামি বেলাল হোসেন বিজয়ের মায়ের বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বিজয় অন্যান্য আসামিদের যোগসাজশে সংঘবদ্ধভাবে মীমকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে হত্যা কর হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।