চাঁদা না দিলে দোকান খুলতে দেবেন না তিনি
পাবনায় গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে থানায় এনে এক ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনার দেশজুড়ে সমালোচনার মধ্যেই চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে জেলার আরেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, চাঁদা না দেওয়ায় তার মুদি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন পুলিশের এক এসআই। এই পুলিশ কর্মকর্তার ‘ভয়ে’ সপরিবারে গ্রামও ‘ছাড়তে হয়েছে’ তাকে।
ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম জানান, আমিনপুর থানায় কর্মরত এসআই ইউসুফ চার মাস আগে তার কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। থানার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, “সম্প্রতি আবারও আমার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে ইউসুফ। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে গত ২ সেপ্টেম্বর আমার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন তিনি। দোকানে থাকা আমার সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ পিতাকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে দোকান থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেন তিনি।”
রফিকুল ইসলামের পিতা ধনি মুন্সী বলেন, ‘‘২ সেপ্টেম্বর এস আই ইউসুফ আমাকে জোর করে দোকান থেকে বের করে নিজ হাতে তালা লাগিয়ে দেয়। কারণ জানতে চাইলে এস আই ইউসুফ আমার ছেলে রফিকুল ইসলাম মুন্সীকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে তার সাথে দেখা করতে বলে। যাওয়ার সময় সে হুমকি দিয়ে যায় টাকা না দিলে স্থায়ীভাবে দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে।’’
পুলিশ সদস্যের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
আমিনপুর বাজার সমিতির সাবেক সভাপতি সেলিম মিয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “কোন পুলিশ সদস্য একজন ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে পারেন না। যদি সেই দোকানে অবৈধ কিছু থাকে তবে একজন ম্যাজিস্ট্রেট, বাজার কমিটি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তা করতে হয়। আর রফিকুলের বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ থাকলে বাজার কমিটি এতদিন অবশ্যই ব্যবস্থা নিতো।”
তবে এসআই ইউসুফ তার বিরুদ্ধে আনীত চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আমার সুনাম নষ্ট করতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে।’’
এ বিষয়ে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “পুলিশ কোন ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা দিতে পারে না। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”