জব্দ করা টমটমের চালকদের জরিমানার বদলে খাদ্য সহায়তা দিল প্রশাসন
লকডাউন অমান্য করায় আটককৃত টমটম চালকদের জরিমানার পরিবর্তে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে উখিয়া জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ৪০ জন চালকদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ।
সরকারি বিধিনিষেধের অষ্টম দিনে জীবিকা উপাজর্নের আশায় টমটম নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন কক্সবাজারের উখিয়ার ৪০ জন চালক। রাস্তায় আসতেই উখিয়া সদরে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে সব টমটম জব্দ করে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো করা হয়।
বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষার পর জরিমানা কিংবা সাজার পরিবর্তে উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেই টমটম চালকদের জরুরি খাদ্য সহায়তা তুলে দেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ। এসময় তিনি তাদের করোনার প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে উল্লেখ করে বাসা থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানান। খাবারের প্রয়োজনে ৩৩৩-এ কল করতে পরামর্শ দেন।
টমটম চালক আলী আকবর বলেন, "এর দুদিন আগে এক টমটম চালকসহ তিনজন সাজা নিয়ে কারাগারে গেছেন। আমরাও নিশ্চিত ধরে নিয়েছিলাম যে, জরিমানা করা হবে। পকেটে তো টাকা নেই, জরিমানা দিতে না পারলে সাজা কাটতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা হলো, তার জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না। নিজের পেটে না থাকলেও সমস্যা হয় না, স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবার মুখে খাবার দিতে না পারলে মৃত্যু ভয় আর কাজ করে না। খাবারের সংস্থান হলে বের হবার দরকার পড়বে না কারোই"।
জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কঠোরতার পাশাপাশি কর্মহীন মানুষদের সহায়তা প্রদান করছে সরকার। ২১টি ক্যাটাগরি বিবেচনায় সহায়তা প্রযোজ্য মানুষদের জরুরি এই সাহায্য দেওয়া হচ্ছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, "মানবিক বিবেচনায় আটক টমটম চালকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। লকডাউনে খাবার না থাকায় ৩৩৩-এ কল করা উপজেলার শতাধিক মানুষকে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আমরা যেমন তৎপর তেমনি কর্মহীন মানুষদের পাশে দাঁড়াতেও প্রস্তুত"।
স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও লকডাউনের বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম সাতদিন অর্থাৎ ১ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত উখিয়ায় ১২২ মামলায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩ জনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পুরো জেলায় একইভাবে জরিমানার আওতায় এসেছে শ্রমজীবী, কর্মহীন অসংখ্য মানুষ।