জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বিরোধী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে উপাচার্যকে বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখলে মঙ্গলবার সকাল সোয়া এগারোটার দিকে উপাচার্যপন্থী একদল শিক্ষক উপাচার্যকে বাসভবন থেকে তাঁর অফিসে নিয়ে যেতে আসেন।
তবে আন্দোলনকারীদের সাথে বাকবিতণ্ডার পর তাঁরা ব্যর্থ হলে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে উপাচার্যের বাড়ির সামনে যান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা।
এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চড়াও হতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ছাত্রলীগের হামলায় আটজন শিক্ষক ও অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ছাত্রলীগ বলছে, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে যারা আন্দোলন করছে তাঁরা ‘শিবির’ কর্মী।
উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষক পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এরকম ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ইতোপূর্বে দেখা যায়নি। উপাচার্যপন্থি শিক্ষকদের উপস্থিতি ও প্রত্যক্ষ উসকানিতে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ছাত্রলীগ যখন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে তখন ভিসিপন্থি শিক্ষকরা তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে হাততালি দিয়েছে।”
হামলার বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, “আমরা শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিবির সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল।”
এর আগে রোববার রাতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের আলোচনা ‘ব্যর্থ’ হলে সোমবার সন্ধায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানার নিয়ে উপাচার্যের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ‘ছাত্রলীগকে চাঁদা দিয়েছেন’ এমন অভিযোগ এনে গত আড়াই ধরে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন একদল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।