দেনাদারকে জড়িয়ে ধরলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী!
পরিবারের তিন সদস্যসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কক্সবাজারের এক মার্কেট মালিক। আক্রান্ত হওয়ায় তাদের বাড়িও লকডাউন করা। কিন্তু লকডাউন ভেঙেই তিনি দোকানের ভাড়া তুলতে চলে যান এক দোকানদারের কাছে। কিন্তু কয়েকমাস ধরে বেচাকেনা না থাকায় দোকানীও ভাড়া দিতে অপারগতা জানান তাকে। ফলে ক্ষেপে গিয়ে এক অদ্ভূত কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন তিনি।
নিজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও ভাড়া দিতে অপারগ ওই দোকানিকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। আরে বলতে থাকেন, "করোনায় আমিও মরব, তুইও মর।"
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদরের লিংকরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় স্থানীয়রা যেমন বিস্মিত হয়েছেন তেমনি সমালোচনাও সরব হয়েছে সবাই।
অস্বাভাবিক ঘটনাটির জন্ম দেন সদরের ঝিলংজার বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম। বুধবার তাকে আইসোলেশনে নেওয়ার পাশাপাশি তার পরিবার ও জড়িয়ে ধরা দোকানীকে পরীক্ষা করা হয়েছে।
সদরের ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান টিপু সুলতান তথ্যের বলেন, গত দুদিন আগেই করোনা আক্রান্ত হন জাহাঙ্গীর আলমসহ তার পরিারের তিন সদস্য। তাদের বাড়িটি লকডাউন করে তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ জাহাঙ্গীর লিংক রোড এলাকায় তাদের মার্কেটে এসে সালামত নামের এক ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে বকেয়া ভাড়া দাবি করেন। দোকানী টাকা দিতে কয়েকদিন সময় চায়। এতে জাহাঙ্গীর ক্ষিপ্ত হয়ে সালমতকে ঝাপটে ধরে বলেন, 'করোনায় আমিও মরব-তুইও মর।' এনিয়ে সালামতসহ স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চেয়ারম্যান টিপু আরও বলেন, "খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহাঙ্গীরকে তিরস্কার করে দোকানী সালামতকে দ্রুত সাবান ও জীবাণুনাশক দিয়ে গোসল করার ব্যবস্থা করেছি। পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানাই।"
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ উল্লাহ মারুফ জানান, খবর পেয়ে জাহাঙ্গীরকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের আরো তিন সদস্য ও জড়িয়ে ধরা দোকানী সালামতকে পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে তাদের।
এদিকে, স্থানীয়দের অভিযোগ করোনায় আক্রান্ত হয়ে লকডাউন থাকার পর তা অমান্য করে মার্কেট মালিক জাহাঙ্গীর নিজের পাওনা আদায়ে গত দুইদিন ধরে মোটরসাইকেল নিয়ে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়িয়েছেন। যেখানে যেখানে তিনি গেছেন এখন সেসব জায়গায় তার আক্রান্ত হবার কথা জেনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছেন কেউ কেউ।