দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা গ্রহণকারী ৯৮ শতাংশ মানুষের শরীরে রয়েছে অ্যান্টিবডি
করোনা প্রতিরোধে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা গ্রহণকারী ৯৮ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং সুস্থ হওয়ার পর টিকা নিয়েছেন, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে। সম্প্রতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) টিকা সংক্রান্ত একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে।
সোমবার সকালে এক অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ গবেষণাটি প্রকাশ করে। প্রধান গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শরফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে "হেমাটোলজিকাল প্যারামিটারস অ্যান্ড অ্যান্টিবডি টাইটার আফটার ভ্যাকসিনেশন আগেন্সট সার্স-কোভ-২" শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাে-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মাে. জাহিদ হােসেন, প্রাে-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মােশাররফ হােসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মাে. সালাহউদ্দীন শাহ সহ-গবেষক হিসেবে প্রকল্পটিতে যুক্ত ছিলেন।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত করোনা টিকা গ্রহণকারী ২০৯ জন টিকাগ্রহীতা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। গবেষণায় অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং অর্ধেকের বেশী স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সাথে জড়িত। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১ শতাংশের পূর্বে কোভিড সংক্রমিত হবার ইতিহাস আছে।
অর্ধেকেরও বেশি অংশগ্রহণকারী পূর্ব থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানিসহ অন্যান্য রােগে ভুগছিলেন। তবে এ ধরনের রােগের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকা গ্রহণের পর অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোনও পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় নি। ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকাগ্রহণের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন। সকলের ক্ষেত্রেই উপসর্গ মৃদু ছিল। রক্ত জমাট বাধা বা এৱকম অন্য কোন জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গবেষণাকালে পরিলক্ষিত হয়নি।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সাথে অ্যন্টিবডির উপস্থিতির কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। টিকা গ্রহণকারীদের মাঝে ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা পূর্বে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে।
গবেষণা থেকে বাংলাদেশের জনগণের উপর টিকা প্রয়ােগের পর কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে সময়ের সাথে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির পরিবর্তন এবং পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিতে নতুন অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য টিকার অ্যান্টিবডি তৈরির কার্যক্ষমতা পর্যালােচনার জন্য আরও গবেষণা প্রয়ােজন বলা জানান গবেষকরা।
কোভিড মােকাবেলায় টিকাদান কর্মসূচির বিকল্প নেই। পাশাপাশি প্রয়ােজনীয় সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলেও মন্তব্য করেন তারা।