ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা
ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার জীবিত বা মৃত নারীর ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে সোমবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একই সাথে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধের ক্ষেত্রে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
তথ্য সচিবসহ সংশ্লিস্ট বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা ৩০ দিনের মধ্যে তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং প্রেস কাউন্সিলকে এফিডেভিটের মাধ্যমে জানাতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
গত ১৯ জানুয়ারি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার জীবিত বা মৃত নারীর ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন এ রিট দায়ের করেন। আইন সচিব, তথ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, 'নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় বলা আছে, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার কোনো নারীর ছবি ও পরিচয় কোনোভাবেই প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু আমরা দেখছিলাম আইনে বাধা থাকলেও হরহামেশাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুর ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে তাদের পরিবারের সদস্যরা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ছবি দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছবি প্রকাশের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। তাই সংক্ষুব্ধ হয়ে এ রিট দায়ের করেছিলাম। আদালত রুল জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন।'
এর আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর ছবি প্রকাশ করা হয়। ওই ছবি প্রকাশে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন এক আইনজীবী। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আইনের সংস্পর্শে আসা কোনো শিশুর ছবি বা পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।