পাখির জন্য গাছের ডালে মাটির বাসা!
পরিবেশ, প্রকৃতির ক্রমবিনাশে আবাসস্থল হারাচ্ছে পরিবেশ পরিশুদ্ধ রাখার কারিগর হিসেবে পরিচিত পাক-পাখালি। প্রতিনিয়ত কমছে পাখির সংখ্যা। তাই আবাসস্থল হারাতে থাকা পাখিদের জন্য গাছের ডালে মাটির বাসা বেঁধে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
আজ রোববার (৪ অক্টোবর) জেলা প্রশাসকের বাংলোতে থাকা গাছের ডালে ৫০টি বাসা বেঁধে এ কার্যক্রমের সূচনা করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, পরিবেশ প্রকৃতি রক্ষায় পাখির ভূমিকা অপরিসীম। পরিবেশ-প্রকৃতির জন্য কক্সবাজার এক অনবদ্য ভান্ডার। কিন্তু, নানা কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
ডিসি বলেন, পাখিদের আশ্রয়স্থল হারানো খুবই বেদনাদায়ক। এ অবস্থা অনুধাবনের পর আমরা প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য গাছের ডালে মাটির বাসা বেঁধে দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে প্রায় ১০ হাজার বাসা বসানোর লক্ষ্য নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আগামী ছয় মাসে ১০ হাজার বাসা বসানোর টার্গেট পুরণ করা হবে জানিয়ে ডিসি আরও বলেন, পাখিদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে; শুরুতে আমরা সরকারি সব দপ্তর ও বাসভবনে এসব বাসা বসাবো। আমাদের এ প্রচেষ্টায় 'এনভায়রনমেন্ট পিপল' নামে একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে।
জেলা প্রশাসক জানান, উদ্যোগটির প্রাথমিক ব্যয় জেলা প্রশাসন বহন করছে। পাশাপাশি একটি এনজিও'র সঙ্গে কথা চলছে। তারা দীর্ঘমেয়াদে ব্যয়ভার বহনে সম্মতি দিয়েছে।
'এনভায়রনমেন্ট পিপল'- এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, 'সাগর-নদী-ঝর্ণা-পাহাড়-গাছ গাছালি সমৃদ্ধ প্রকৃতির মিলনে কক্সবাজার অনন্য বাস্তুসংস্থান ছিল। আগে গাছে গাছে পাখির বিচরণ ছিল দেখার মতো। কিন্তু, সেদিন আজ আর অবশিষ্ট নেই। পাখিও এখন আর আগের মতো দেখা যায় না।'
তিনি আরো বলেন, পাখির সংখ্যা বাড়ানো ও বিলুপ্তপ্রায় পাখি ফিরিয়ে আনতে গাছে গাছে পাখির নিরাপদ বাসা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। পর্যায়ক্রমে পুরো কক্সবাজারের মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, বাগান বাড়ি, রাস্তার পাশের গাছে গাছে- তা ছড়িয়ে দেয়া হবে। এসব বাসা রক্ষণাবেক্ষণ এবং পাখি শিকার বন্ধেও আমরা কাজ করবো। আশা করছি এ কার্যক্রমের কল্যাণে পাখিরা ফিরে আসবে।
এসময় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা, সহকারী কমিশনার (এনডিসি) মাখন চন্দ্র সূত্রধর, সহকারী কমিশনার মো. জোবায়ের হাবিব, সহকারী কমিশনার সৈয়দ মুরাদ ইসলাম-সহ এনভায়রনমেন্ট পিপলের স্বেচ্ছাসেবকগণ উপস্থিত ছিলেন।