পাবনা ট্রিপল মার্ডার: মসজিদের ইমাম যখন খুনি
পাবনায় অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তাকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফায়ার সার্ভিস মসজিদের ইমাম তানভীর ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্র, লুট করা অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
গ্রেপ্তারকৃত তানভীর নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার হরিপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রোববার পাবনা জেলা পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন লাগোয়া পুরনো দ্বিতল একটি বাড়ির নিচতলায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিঃসন্তান আবদুল জব্বার তার স্ত্রী সুম্মা খাতুন ও পালিত মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া থাকতেন। মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া আবদুল জব্বারের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রধরে ইমাম তানভীর ওই দম্পতির সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে ছেলের মতো মিশতে থাকে।
এসপি বলেন, বাড়ির বাজার থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক লেনদেনের বিভিন্ন বিষয়ও আবদুল জব্বার তার সঙ্গে পরামর্শ করতেন। কৌশলী তানভীর তাদের বিশ্বাস অর্জন করে মাঝে মধ্যে ওই বাড়িতে রাত্রিযাপনও করতেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সম্পত্তির লোভে তানভীর তাদের হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ৩১ মে তিনি রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে যান। রাতের খাবারের পর পারিবারিক আলাপ শেষে আবদুল জব্বারের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে ঘুমন্ত জব্বারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে, পাশের ঘরে ঘুুমিয়ে থাকা সুম্মা খাতুন ও সানজিদাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।
হত্যার পর আলমারি খুলে নগদ দুই লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি ও সোনার গহনা নিয়ে গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে চলে যান তানভীর। হত্যাকাণ্ডের চারদিন পর ৫ জুন ওই বাড়ি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় সুম্মা খাতুনের ভাই আবদুল কাদের পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তানভীরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।