প্রধানমন্ত্রী বলে গেছেন, অভিযান যেন চলে: কাদের
দুর্নীতি মাদক ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্কে যাওয়ার আগে এয়ারপোর্টে- আমি, দলের সিনিয়র নেতা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও উচ্চ পর্যায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তিনি সবার সামনে বলে গেছেন যে গডফাদার, মাদক, দুর্নীতিবাজ, টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজ কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দলীয় হলেও ছাড় না দেয়ার জন্য বলেছেন। আমি (প্রধানমন্ত্রী) অনুপস্থিত থাকলেও অভিযান চলবে।”
দুর্নীতি, মাদক ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে সরকার আটঘাট বেঁধেই নেমেছে বলে জানান কাদের।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দলের হোক বা যেই হোক কোনো আপস নেই। দুর্নীতি, মাদক ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে অভিযান চলছে, চলবে। আমরা বসে নেই, সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে। আগে বা পরে কেউ অপরাধ করে পার পাবে না।”
“প্রধানমন্ত্রী আরও বলে গেছেন দুর্নীতির চক্র ভেঙে দিতে হবে। কারো সাথে আপোস হবে না,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, কেউ কেউ গা-ঢাকা দিয়েছে বা আড়াল হয়ে যাচ্ছে তাদের খুঁজে বের করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি সম্রাট কেন আটক হচ্ছে না বা কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি জানিনা, তবে যারা গা-ঢাকা দিয়েছে তাদেরকে খোঁজা হচ্ছে।”
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি, মাদক, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ সব অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করছে। দলের ভিতরে পদক্ষেপ নিয়েছে, প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থাও নিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি'র সৎ সাহস নেই, সেজন্য হাওয়া ভবনে দুর্নীতি হয়েছে তখন তারা কাউকে পাকড়াও করতে পারেনি। শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী তখন সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা বেড়েছে, জনগণ তাকে পছন্দ করছে। আর তারা এ মুহূর্তে উল্টা কথা বলছে।”
“তারা যদি ভাল রাজনীতি করতো তাহলে ভাল কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতো,” যোগ করেন তিনি।
জি কে শামীম টেন্ডারবাজি করে সরকারি এত কাজ কিভাবে পেল জানতে চাইলে কাদের মিডিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা তখন কোথায় ছিলেন? দেখেন আমরা কেউ বসে নেই। সরকার এখন আটঘাট বেঁধে নেমেছে।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্প্রতি দেশজুড়ে জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। গত বুধবার রাজধানীর ফকিরাপুলে ইয়ংম্যান ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে ১৪২ জনকে আটক করে র্যাব।
পরবর্তীতে ক্লাবের সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে যুবলীগ।
এছাড়া, রাজধানীর বনানী, মতিঝিল ও গুলশান এলাকার তিনটি ক্যাসিনো সিলগালা করে দেয়া হয় এবং আরও ৪০ জনকে আটক করা হয়।
পাশাপাশি, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে শুক্রবার রাজধানীর নিকেতনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সাত দেহরক্ষীসহ ‘যুবলীগ নেতা’ গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
অভিযানে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা ১৬৫ কোটি টাকার নথি এবং ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা নগদ ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।