ফেনীতে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে খুনের মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফেনী শহরের বারাহিপুর এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে ফেসবুকে লাইভে এসে স্ত্রী তাহমিনা আক্তারকে কুপিয়ে হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে তার স্বামী ওবায়দুল হক টুটুলের ফাঁসির আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা।
আদালত সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা। রায়ে টুটুলকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, 'স্ত্রী কর্তৃক বর্বর নির্যাতনের কারণে তাকে খুন করেছেন বলে আসামী টুটুল স্বীকার করেছেন। জনগণ ও প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার জন্য টুটুল ফেসবুক লাইভে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটান।'
রায় ঘোষণার সময় আদালতে টুটুলকে স্বাভাবিক দেখা গেছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ, বাদিপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু, আসামীপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ জানান, রাষ্ট্রপক্ষ টুটুলের অপরাধ প্রমাণে সক্ষম হয়েছে।
বাদিপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু জানান, কেউ অপরাধ করে পার পাবার কোন সুযোগ নেই। এ রায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
মামলার বাদি তাহমিনার পিতা সাহাবউদ্দিন মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি এ রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল স্ত্রী তাহমিনাকে কুপিয়ে হত্যা করেন ওবায়দুল হক টুটুল। এ ঘটনায় সাহাবউদ্দিন বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়; মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর একমাত্র আসামী ওবায়দুল হক টুটুলকে অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করা হয়। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ইমরান হোসেন গত ১১ নভেম্বর টুটুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় ৫ বছর আগে ফেনী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড বারাহিপুর এলাকার গোলাম মাওলা ভূঁঞার ছেলে ওবায়দুল হক ভূঁঞা টুটুল কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আকদিয়া গ্রামের সাহাবউদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের তাফান্নুন আরোয়া মায়োস নামে দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। স্ত্রীকে হত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে টুটুল সবার কাছে মাফ চান এবং ঘটনার জন্য নিজেই দায়ী বলে স্বীকার করেন।