ফেসবুক, ইউটিউবের কাছে সরকার অসহায়: মোস্তফা জব্বার
ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো থেকে মানহানিকর কন্টেন্ট সরানোর ক্ষেত্রে সরকার 'অসহায়' বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।
সোমবার রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "অনেকসময়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে মানহানিকর তথ্য সরানোর বিষয়ে আমাদের আবেদনে সাড়া দেয় না।"
"এসব প্ল্যাটফর্ম থেকে কোন কন্টেন্ট দেখেই তা বন্ধ করে দেয়ার মতো ক্ষমতা ও সক্ষমতা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) নেই। সুতরাং এসব কন্টেন্ট অপসারণ না করার জন্য বিটিআরসিকে দায়ী করাও অবিচার।"
মন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল এসব অপরাধকে কেউই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
এর আগে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া, জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান সাবরিনা আলিফ চৌধুরী, অভিনেত্রী পরীমনি-সহ আরও কিছু ব্যক্তির গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারী বিভিন্ন ছবি, ভিডিও ও প্রতিবেদনগুলো নানা মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের শুনানিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভূমিকা নিয়ে গতকাল রোববার প্রশ্ন তোলেন হাইকোর্ট।
শুনানিতে আদালত বলেন, "বিটিআরসি আদতে কী করে? এগুলো (ভাইরাল ভিডিও) বন্ধ করার জন্য তাদের কি ক্রমাগত নির্দেশনার প্রয়োজন আছে? বিটিআরসি কি এসব উপভোগ করে? আমরা কি সন্তানসন্ততি নিয়ে থাকি না? আমাদের কি পরিবার নেই? সবকিছুই কেন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়?"
আদালত আরও বলেন, "তারা এগুলো প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিতে পারে। কিন্তু তা না করে তারা এসব উপভোগ করে। আপনারা প্রত্যেকেই আসেন আমাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি চালানোর জন্য: 'বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন।' কেন দেব আমরা? আল-জাজিরার মামলায় আমরা এটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি যে, এসব বন্ধ করার সকল ক্ষমতা রয়েছে বিটিআরসির। কিন্তু এখনো একের পর এক রিট নিয়ে আসা হচ্ছে।"
"আমরা বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে উপস্থিত হতে বলি, এবং জিজ্ঞাসা করি যে আপনি কেন এসব করছেন, আপনি কী জন্য দায়িত্বে বসে আছেন? এসব নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তাদের আছে, কিন্তু তারা তা করছে না। হাইকোর্টের নির্দেশনা ছাড়া কেউ এসব পাত্তা দেয়ও না," বলেন আদালত।
আদালত আরও বলেন, "বিটিআরসির এমনিতেই ক্ষমতা আছে। তারপরেও আমরা একটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করেছি। তারপরেও কি আমরা এখন প্রতিদিন তাদেরকে (বিটিআরসি) নির্দেশনা দেব?"
এ বিষয়ে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, "হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ফেসবুক ও ইউটিউবকে ৫০টি ভিডিও এবং ৩৫টি লিংক সরাতে অনুরোধ করেছি।"