বজ্রপাত রোধে সারাদেশে ৩৮ লাখ তালগাছ রোপন করা হয়েছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বজ্রপাতের প্রভাব হ্রাসে এ পর্যন্ত দেশব্যাপী ৩৮ লাখ তালগাছের চারা রোপন করা হয়েছে।
রাজধানীর স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে ব্র্যাক আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বজ্রপাতের ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বজ্রপাত ব্যবস্থাপনায় আমাদের এখনও পরীক্ষিত মডেল নেই,যেমন আছে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে।
“এই সীমাবদ্ধতা উত্তোরণের জন্য সরকার কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত দুই ধরনেরই সমাধান চায়। সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে গবেষণার ওপর। কেননা, বজ্রপাত নিয়ে সকল স্তরে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। একমাত্র বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমেই উত্তোরণের পথ পাওয়া যাবে।”
বজ্রপাত রোধে সরকার কোন কোন বিষয়গুলো সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে তা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, “বিশ্বে প্রতিবছর বজ্রপাতে প্রায় ২ থেকে ২৪ হাজার লোক মারা যায় এবং প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার লোক আহত হয়। পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০০ বার বজ্রপাত হয় অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ৮০ লক্ষবার বজ্রপাত হয়। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় ভেনিজুয়েলার মারাকাইবো লেকে যা গড়ে বছরে ৩০০ দিন। এটাকে পৃথিবীর বজ্রপাতের রাজধানী বলা হয়।”
বাংলাদেশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, “এক হিসাবে দেখা যায় ২০১১-২০১৮ সালে দেশে বজ্রপাতে কমপক্ষে ১ হাজার ৭৬০ জন মানুষ নিহত হয়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে মাত্র ৪ দিনে বজ্রপাতে ৮১ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বাংলাদেশে বজ্রপাতে বিভিন্ন সময়ে মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও অল্প সময়ে এত বেশি লোক কখনো মারা যায়নি। ২০১৮ সালে নিহত হয় ৩৫৯ জন মানুষ । বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক Lightning Detection System স্থাপনে কার্যক্রম
গ্রহণ করা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মহসীন, বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার এন্ড ফ্লাড মডেলিং এর অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মোঃ আব্দুল মান্নান।