বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গতিশীল করতে টিকফা বৈঠকে গুরুত্ব দিল যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে প্রতি তিন থেকে চার মাস পর টিকফার ইন্টারসেশনাল সভা করার প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। করোনাকালীন যে সকল মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তৈরী পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে, সে সকল প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রেরণ করা হলে- এ বিষয়ে মার্কিন সরকার সহযোগিতা করবে।
সভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের স্থগিতকৃত জিএসপি সুবিধা পুনঃরায় চালুর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে- যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পূর্বঘোষিত বিভিন্ন দেশের জন্য মার্কিন জিএসপি সুবিধা প্রদান প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে। পরবর্তী প্রকল্প চালু হলে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত" ট্রেড এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা)" এর ইন্টারসেশনাল সভা গতকাল (২৫ আগষ্ট) রাতে অনলাইন প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এর নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অংশ গ্রহণ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাসিসটেন্ট ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ ফর সাউথ এন্ড সেন্ট্রাল এশিয়া ক্রিস উইলসন এর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধি দল অংশ গ্রহণ করে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তৈরী পোশাক, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, হেলথ প্রডাক্ট রপ্তানি, করোনাকালে তৈরী পোশাক এর ক্রয় আদেশ বাতিল না করা, ভ্যাকসিনসহ অন্যান্য মেডিকেল সামগ্রী উৎপাদন, বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগবৃদ্ধি, শিল্প -কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর, কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের তৈরি পণ্য সহজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তাণির বিষয়ে মার্কিন সরকারের সহযোগিতা কামনা করে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর শুল্প কমানোর জন্য আহবান জানানো হয়। বৈঠকে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে ঘোষিত সুযোগ-সুবিধাগুলোও তুলে ধরে- মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে পুঁজি লগ্নির আহবান জানানো হয়। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির ক্ষেত্রে চলমান জটিলতা নিরসনে আলোচনা অব্যাহত রাখার পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে তুলা রপ্তানির জটিলতা নিরসন, ই-ওয়েষ্ট রেগুলেশন সংশোধন, দেশের ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড সংশোধন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য চালু, বিভিন্ন মার্কিন পণ্য আমদানি শুল্ক কমানোসহ অন্যান্য বিষয় উত্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এবং বিশ্বমানের পণ্য তুলনামূলক কম রপ্তানি রপ্তানি করতে সক্ষম বলেও আলোচনায় উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, টিকফার ৬ষ্ঠ সভা যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে।