বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষা শক্তিশালীকরণে ৮ কোটি ইউরো দিয়েছে জার্মানি ও ইইউ
সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মূল কিছু খাত শক্তিশালী করতে ৮ কোটি ইউরো (প্রায় ৮০০ কোটি টাকা) বাংলাদেশ সরকারের তহবিলে স্থানান্তর করেছে জার্মানি ও ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কোভিড-১৯ সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে রপ্তানি নির্ভর শিল্পের শ্রমিকদের দুর্দশা কমানো এ সহায়তার মূল লক্ষ্য।
বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্প (আরএমজি), চামড়াজাত পণ্য এবং পাদুকা শিল্পের বেকার ও অর্থনৈতিক দৈন্যতায় কবলিত শ্রমিকদের কল্যাণে সরকার যে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসুচি নিয়েছে তার আওতায় এই তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসে টেরিঙ্ক বলেন, "সঙ্কট মোকাবিলার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সরকারি কাঠামো যেন কার্যকর, সক্ষম উপায়ে পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করে তা নিশ্চিত করা। তার সঙ্গে দ্রুত অর্থায়নের সক্ষমতাও থাকতে হবে। বাংলাদেশ সরকার দ্রুত প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবিলায় সামাজিক সুরক্ষা কর্মসুচির পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তার মাধ্যমে নতুন প্রকল্পের আওতায় যাদের প্রয়োজন সেসব মানুষকে সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। এর আওতায় আরএমজি, চামড়াজাত পণ্য এবং পাদুকা শিল্পের ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদের জীবনধারণে পর্যাপ্ত সাহায্যের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে শ্রমিকদের জন্য যথোপযুক্ত এবং টেকসই সাহায্যের এই যৌথ লক্ষ্যে ইইউ এবং এর সদস্য দেশগুলো সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।''
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ইইউ এবং জার্মানি ইতোপূর্বে মোট ১১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো সহায়তার অঙ্গীকার করে। সাম্প্রতিক অনুদানটি তার প্রথম কিস্তি। বাংলাদেশের জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল সংস্কার কর্মসুচিতে বাজেট সহায়তা হিসাবে তহবিলের অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।
জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহল্টজ বলেন, "আরএমজি এবং চামড়াজাত শিল্পের মতো প্রভাবিত খাতে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের সহায়তায় আমরা ইইউ'য়ের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। আশা করছি, সহায়তা যতবেশি সম্ভব প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। এজন্য আমরা সরকারি প্রচেষ্টা, শ্রমিক সংগঠন এবং কারখানা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।"
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর প্রথম সামাজিক সুরক্ষা কর্মসুচির আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত ও বেকার হিসাবে চিহ্নিত আরএমজি, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের কর্মীদের অ্যাকাউন্টে ৩,০০০ টাকা করে স্থানান্তর করা হয়। অর্থ প্রদাণ সম্পন্ন হয় শ্রম মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে।
এই কর্মসূচির বিধিমালা মোতাবিক সহায়তার উপযুক্ত শ্রমিকেরা কমপক্ষে তিন মাস নগদ অর্থ পাবেন। কর্মদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জোট যেমন; বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করেছে। সুবিধাভোগীদের ব্যাংক বা মোবাইল লেনদেনের অ্যাকাউন্টে সহায়তার অর্থ স্থানান্তর করা হয়।