বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরই নিরাপদ জায়গা: গবেষণা
রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য কক্সবাজারের তুলনায় ভাসানচরই বেশি নিরাপদ ও সুবিধাজনক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের একদল গবেষকের করা একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ফলাফল।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে একটি সেমিনারের মাধ্যমে 'কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর: সুবিধা ও প্রতিকূলতা' শিরোনামে গবেষণাটির ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ভাসানচর একটি নতুন দ্বীপ হিসেবে পুরোপুরি বসবাসযোগ্য। এ দ্বীপে প্রতিষ্ঠিত স্থাপনাগুলো- আধুনিক বাসস্থান, রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র এবং বাঁধ দ্বীপটিকে টেকসই করেছে। বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে এই দ্বীপটি ডুবে যাবার কোনো আশঙ্কা নেই। কৃষিকাজ, সবজিচাষ, মাছ শিকার সহ এখানে আরও জীবন-জীবিকার সুযোগ সুবিধা রয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ধর্মকর্ম পালন ও বিনোদনের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। বিশেষ পরিস্থিতে দুর্যোগ হলে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র।
গবেষণার ফলাফলে আরও বলা হয়, তুলনামূলকভাবে ভাসানচর বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ একটি জায়গা। দ্বীপটিকে আধুনিক সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মূল ভূখন্ড থেকে দ্বীপটিতে যাতায়াতের ভাল ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মানবাধিকারের নিশ্চয়তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। ভাসানচরে অবস্থার উন্নতির জন্য আরও অনেক ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, "আমি ব্যক্তিগতভাবে ঘূর্ণিঝড়ের পথ নিয়ে স্টাডি করে দেখেছি, ঠিক দ্বীপটির উপর দিয়ে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের পথ যায়নি। আছে দ্বীপটির দুই পাশে। এখন যদি ১৯৭০ সালের মতো ঘূর্ণিঝড়ও হয় সেটাকেও মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা এই দ্বীপে রাখা হয়েছে। কারণ সরকার এখানে ১৯ ফিট উচ্চ বাঁধ দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে। এছাড়াও বন, ওয়েভ ব্রেকারসহ এখানে চার ধরনের বেরিয়ার থাকার কারণে ৭০ সালের মতো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।"
তিনি বলেন, "সব বিবেচনায় ভাসানচর খুবই টেকসই। অন্যদিকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো সঠিকভাবে গড়ে তোলা হয়নি।"