বুড়িমারী স্থলবন্দরে যাত্রী পারাপার বন্ধ, বিশেষ ব্যবস্থায় চলবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আন্তর্জাতিক বুড়িমারী স্থলবন্দর অভিবাসন রুটে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক বুড়িমারী স্থলবন্দর অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) পুলিশের অফিসার ইনর্চাজ (এসআই) আনোয়ার হোসেন ও বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমস সহকারী কমিশনার কেফায়েতুল্লা মজুমদার এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের পাসপোর্টধারী পর্যটক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসাগ্রহণকারী বিভিন্ন রোগী ও আমদানি-রপ্তানিকারক কাজে ব্যবসায়ীরা এ রুট ব্যবহার করেন।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমস ও স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টায় বুড়িমারী স্থলবন্দর ও চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর জিরো পয়েন্টে উভয় দেশের কাস্টমস, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, অভিবাসন পুলিশ, বিজিবি, আমদানি-রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা এক বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও সিদ্ধান্ত হয়, ভারত, ভুটান থেকে বাংলাদেশে আগত ট্রাকের চালক এবং বাংলাদেশ থেকে ভারত গমনকারী ট্রাকের চালক তাদের গাড়ি থেকে নামতে না পারেন এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ামাত্র যেন ট্রাক চালকরা নিজ দেশে ফেরত যেতে পারেন তা নিশ্চিত করা।
বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল বলেন, 'সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে আমরা আপাতত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সরকারিভাবে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হলে সঙ্গে সঙ্গে যেন উভয় দেশের ট্রাক ও চালকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়, এজন্য স্থানীয় উভয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আমাদের সকল ব্যবসায়ী এবং সরকারি কর্মকর্তাগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন।'
এদিকে আন্তর্জাতিক বুড়িমারী অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) পুলিশের ইনচার্জ এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ২৬ এপ্রিল থেকে আগামী ৯ মে পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। যদি চিকিৎসা নিতে ভারতে গিয়ে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক থেকে থাকেন এবং তিনি হাইকমিশনের অনুমতি নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে তাকে বিধি অনুযায়ী গ্রহণ করা হবে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্থানীয় আইসোলেশন কেন্দ্রে ওই ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের কোভিড-১৯ বিষয়ে অনুমতি মিললে ওই ব্যক্তি তার নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবেন। আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।'
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মোঃ মাহফুজুল ইসলাম ভূঁঞা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক থাকার কথা নিশ্চিত করে বলেন, 'আমরা এখনো সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি। সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন পেলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া উভয় দেশের ট্রাক চালককে গাড়িসহ যেন দ্রুত ফেরত পাঠানো যায়, এজন্য আমরা আজ সোমবার এক বৈঠক করেছি।'