ভাসানচরের পথে রওনা দিয়েছেন দু'হাজার রোহিঙ্গা
চতুর্থ দফার প্রথম যাত্রায় চট্টগ্রাম পৌঁছানো ২ হাজার ১৪ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে এই রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ভাসানচরে যেতে সকাল ৬টা থেকে রোহিঙ্গারা নৌবাহিনীর জাহাজে উঠতে শুরু করেন। সকাল ১০টার আগেই রোহিঙ্গারা জাহাজে উঠে পড়েন। শেষ হয় সব প্রস্তুতি। আর সোয়া ১০টার দিকে নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
জাহাজে উঠা মোহাম্মদ ইউছুফ নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, পরিবারের ৮ জনকে নিয়ে তিনি ভাসানচরে যাচ্ছেন। ক্যাম্পে ঝুপড়িতে নিদারুণ কষ্টে কেটেছে দিন। আগে ভাসানচরে অবস্থান করা স্বজন ও পরিচিতজনদের কাছ থেকে ভাসানচরের পরিবেশ সম্পর্কে জেনে ভালো থাকার আশায় স্বেচ্ছায় পরিবার নিয়ে ভাসানচরে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছান এসব রোহিঙ্গারা। গতকাল বেলা ১২টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে প্রথম দফায় ১৭টি এবং বেলা তিনটার দিকে দ্বিতীয় দফায় ২১টি গাড়িতে মোট ২ হাজার ১৪ জন চট্টগ্রামে পৌছান। তাদের সাথে দুটি খালিবাস, দুটি এ্যাম্বুলেন্স, সামনে পেছনে ৫টি প্রটোকল ভ্যান ও রোহিঙ্গাদের মালামাল বহনে ১১টি কাবার্ডভ্যান ছিল। আজ সোমবার আরও দু'হাজার জনকে চট্টগ্রামে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে তিন দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৬ হাজার ৬৮৮ জনকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।
২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় স্থানান্তর করা হয় ১ হাজার ৬৪২ জন। ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জনকে স্থানান্তর করা হয়। আর চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় স্থানান্তর করা হয় ৩ হাজার ২৪২ জনকে। আজ ও কাল আরো প্রায় ৪ হাজার জনকে ভাসানচর স্থানান্তর করার প্রস্তুতি রয়েছে। এরমাঝে ২ হাজার জন ইতোমধ্যে ভাসানচরের পথে রয়েছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে আসে আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ। সেখান থেকে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে সরকার।