ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)-কে কটূক্তি করে ফেসবুকে মন্তব্য করার অভিযোগে এক যুবকের শাস্তির দাবি কেন্দ্র করে ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ পুলিশসহ দুই শতাধিক।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বোরহানউদ্দিন পৌর এলাকার ঈদগাহ মাঠে মুসল্লিদের বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ অক্টোবর ভোলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হযরত মুহাম্মদ (সা)-কে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে সন্ধ্যার পর বিপ্লব চন্দ্র বোরহানউদ্দিন থানায় এসে তার আইডি হ্যাক হয়েছে মর্মে জিডি করেন।
এরপর বিষয়টি তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা পুলিশ বিপ্লব চন্দ্রকে তাদের হেফাজতে আটক করে রাখে।
এ ঘটনা কেন্দ্র করে রোববার সকালে ‘তাওহিদী জনতা’র ব্যানারে মুসল্লিরা বিপ্লবের ফাঁসির দাবিতে ঈদগাহ মাদ্রাসার মাঠে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে উত্তেজিত মুসল্লিরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মাহফুজ পাটওয়ারী, মিজান, শাহিন, মাহবুব নামে চারজন মুসল্লি নিহত হন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অনেক লোককে আটক করে।
ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় রোববার মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় ৪জন নিহত ও ২০ পুলিশসহ অন্তত দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই মুসল্লিরা ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছের গুড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
এদিকে বরিশাল থেকে ইউএনবির জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভোলার সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১৫ জনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হাসনাত রাসেল তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।