লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সভা ডেকেছে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর
লাইটার জাহাজযোগে দেশের বিভিন্ন নৌ রুটে পণ্য পরিবহনে ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে বৈঠক ডেকেছে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর।
আগামী ১৪ অক্টোবর সকালে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারিং এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন এবং ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিওটিসি) প্রতিনিধিরা।
নৌ রুটে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার সার্বিক চিত্র নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় ১১ অক্টোবর Bulk importers at mercy of lighter vessel cartel শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর আজ এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ জারি করেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এন্ড শিপ সার্ভেয়ার মো: মনজুরুল করিম। সভায় সভাপতিত্ব করবেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এজেডএম জালাল উদ্দিন।
এদিকে গত ২৩ আগষ্ট নৌ পরিবহন অধিদপ্তর একটি জরুরি নৌ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে উল্লেখ করা হয় ২০১৩ সালের পণ্য পরিবহন নীতিমালা অনুযায়ী ডব্লিওটিসির সিরিয়াল অনুযায়ী পণ্য বোঝাই ও খালাস করবে। এই আদেশ অমান্যকারী নৌযান মালিক মাস্টার এবং নাবিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
২০১৩ সালের পণ্য পরিবহন নীতিমালায় বলা হয়েছে, সিমেন্ট কারখানার আমদানি করা কাঁচামালের ৫০ শতাংশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নিয়ন্ত্রণাধীন জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করতে হবে। এই নীতিমালা অনুযায়ী সিমেন্ট কারখানা মালিকদের নিজস্ব জাহাজ থাকলেও বা বসিয়ে রেখে ভাড়া করা জাহাজে পণ্য পরিবহনের বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়।
জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারির পর ডব্লিওটিসির সাথে সিমেন্ট ম্যানুফেকচারার এবং শিল্প মালিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ডব্লিওটিসির সিরিয়াল অনুযায়ী চলতে ডব্লিওটিসির আওতার বাইরে থাকা জাহাজের নাবিকদের মারধরের ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে বাল্ক (খোলা) পণ্য খালাসের পর দেশের বিভিন্ন নৌ রুটে পরিবহন করে লাইটার জাহাজ। বর্তমানে ডব্লিওটিসির নিয়ন্ত্রণে ১ হাজার ৩০০ টি জাহাজ এবং শিল্প গ্রুপের অধীনে প্রায় ৪০০ জাহাজ এবং অন্যান্য রুটের জাহাজ মিলে প্রায় ২ হাজার ৫০০ লাইটার জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গর থেকে দেশের ৩৪ টি রুটে পণ্য পরিবহন করে।
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারার এসোসিয়েশনের ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শহিদুল্লাহ টিবিএসকে বলেন, লাইটার জাহাজে সিমেন্ট শিল্প মালিকদের ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। আমাদের জাহাজ কোন অবস্থাতেই ডব্লিওটিসির সিরিয়াল অনুযায়ী পরিচালনা করবোনা। জাহাজ সিরিয়াল অনুযায়ী পরিচালনা এবং ৫০ ভাগ পণ্য ডব্লিওটিসির জাহাজের পরিবহনের যে সিন্ধান্ত সভায় তা প্রত্যাহারের দাবি জানাবো।
তিনি আরো বলেন, শিল্প মালিকদের সাথে আলোচনা না করে ডব্লিওটিসি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন রুটে ভাড়া কমিয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অঞ্চলে টন প্রতি ভাড়া ৫৪৮ থেকে কমিয়ে ৪১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এই রুটে ভাড়া কোন অবস্থাতেই ২৫০ টাকার বেশি হতে পারেনা। ভাড়া কমানোর বিষয়টিও আমরা সভায় উপস্থাপন করবো।
বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ডব্লিওটিসির কনভেনার নুরুল হক বলেন, আমরা সভার নোটিশ পেয়েছি। বর্তমানে নৌ রুটে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় কোন বিশৃঙ্খলা নেই দাবি করেন তিনি।