সম্পর্ক প্রত্যাখান পরিবারের, অভিমানে ঢাবি ছাত্রীর আত্মহত্যা
ফারিয়া তাবাসসুম রুম্পা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থবর্ষের ছাত্রী। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে জনৈক যুবকের সঙ্গে। কিন্তু ওই যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়ায় এ সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। অন্যত্র বিয়ে ঠিক করায় পরিবারের ওপর অভিমান করেই রূম্পা আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে রুম্পা পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার কন্দর্পপুর নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন।
জানা যায়, পাবনার ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের বাবুলচরা গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারিয়া তাবাসসুম রুম্পা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি থাকতেন শামসুন্নাহার হলে। রুম্পার বাবা ফরিদ উদ্দিন মন্ডল পেশায় সরকারি চাকুরীজীবী। তিনি জেলার আটঘরিয়া উপজেলার কন্দর্পপুরে ভাইয়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকেন।
সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা যায়, পছন্দের ছেলেকে বাদ দিয়ে অন্যের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ায় সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ওই ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন রুম্পা।
তার সহপাঠী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'রুম্পা খুবই মার্জিত, ভদ্র, মেধাবী এবং প্রচণ্ড ধার্মিক ছিল। আমরা চার বছর রুম্পার সঙ্গে ক্লাস করেছি, কিন্তু একদিনও কোনো ছেলেই তার চেহারা দেখেনি। তার আত্মহত্যার খবর শুনে আমরা নিশ্চিত হতে পারছিলাম না, এই মেয়েটা আসলেই রুম্পা কি না। কারণ কেউই তাকে দেখেনি।'
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, 'ক্লাস সেভেন থেকে রুম্পার সঙ্গে একটি ছেলের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। রুম্পার সঙ্গে যে ছেলের সম্পর্ক ছিল সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়ায় ওর পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এটা নিয়েই পরিবারে দ্বন্দ্ব চলছিল। হয়তো জোর করেই অন্যত্র বিয়ে দিতে চেয়েছিল পরিবার। আর সে কারণেই রুম্পা আত্মহত্যা করতে পারে বলে আমাদের ধারণা।'
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, রুম্পা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরও বলেন, 'খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় নিহত রুম্পার বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।'
মৃত্যুর সঠিক কারন উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে বলে দাবি করেন ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম।