সরকার বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের সাথে যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক এই বিমানবন্দরের রানওয়ে হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট, যার ১ হাজার ৩০০ ফুট থাকবে সাগরের বুকে; এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে।
বাসস
29 August, 2021, 11:30 am
Last modified: 29 August, 2021, 01:27 pm
কক্সবাজার বিমানবন্দর বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় 'রিফুয়েলিং হাব' হিসেবে গড়ে উঠবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগের একটা কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সরকার দেশের ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগের একটা কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায়। সেক্ষেত্রে, কক্সবাজার হবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সমুদ্রসৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র এবং অত্যন্ত আধুনিক শহর। যাতে আর্থিকভাবেও আমাদের দেশ অনেক বেশি লাভবান হবে।'
তিনি আজ সকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধনকালে একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার বিমানবন্দরের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, 'এই বিমানবন্দর সম্প্রসারণ হলে, পাশ্চাত্য থেকে প্রাচ্যে বা প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে যত প্লেন যাবে তাদের রিফুয়েলিংয়ের জন্য সব থেকে সুবিধাজনক জায়গা হবে এই কক্সবাজার। আমি বলতে পারি যে ভবিষ্যতে কক্সবাজারই হবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কেননা, খুব স্বল্প সময়ে এখানে বিমান এসে নামতে এবং রিফুয়েলিং করে চলে যেতে পারবে'।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এই রানওয়ে সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমি মনে করি, আমরা যে ওয়াদা জনগণের কাছে দিয়েছিলাম সেটা আরো একটা ধাপ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।'
সমুদ্র তীরবর্তী জমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে নতুন ১০ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে হবে- যার ফলে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৪ এর মতো বড় আকারের বিমানগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে এবং এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার পথ সুগম হবে। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা সরাসরিই কক্সবাজারে আসতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রথমবারের মত আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে এই জলভাগের ওপর আমরা যে রানওয়ে নির্মাণ করছি সেটা দৃষ্টিনন্দন হবে এবং অনেকে এটাই দেখতে যাবে। তিনি জলভাগের ওপর এই রানওয়ে নির্মাণের সাহস নিয়ে কাজ শুরু করতে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, তার সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে বলেন, 'আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপকল্প ঘোষণা করেছিলাম ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে সেখানে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। এটাকে ধরে রেখে আমাদের উন্নত দেশের পথে এগিয়ে যেতে হবে এবং ইনশাল্লাহ আমরা সেটা করতে পারবো।'
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এভিয়েশন অগ্রগতি সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুষ্ঠানে একটি ভিডিওচিত্র পরিবেশিত হয়।
১ হাজার ৫৬৮ দশমিক ৮৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মে মাসে সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও এর আগেই এটি সম্পন্ন করা হবে এবং নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর সরকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়।
দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক এই বিমানবন্দরের রানওয়ে হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট, যার ১ হাজার ৩০০ ফুট থাকবে সাগরের বুকে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কক্সবাজার বিমানবন্দর হবে বিশ্বের সাগর উপকূলে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরগুলোর অন্যতম এবং এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে।
এর ফলে, বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহন ক্ষমতাও বাড়বে। বাড়বে ফ্লাইট অপারেশনের সংখ্যা। ভবিষ্যতে কক্সবাজার সংলগ্ন মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইনসগুলোর বড় বড় উড়োজাহাজও অবতরণ করতে পারবে কক্সবাজারে। আগামী ৫০ বছরের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে এই প্রকল্প।
While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.