সাজেকের ৫ শিশুর বেঁচে থাকার আশা জাগিয়ে রাখল সেনাবাহিনী
ইতোমধ্যে আট শিশু মারা গেছে; আরও পাঁচ জনের অবস্থা মুমূর্ষু। তাদের বাঁচাতে হলে এখনই উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। অন্যথায় কিছুক্ষণ পর তারা মারা যাবে বলে ধারণা সবার। রাঙামাটির সাজেকের দুর্গম শিয়ালদহ মৌজার লুংথিয়ান ত্রিপুরা পাড়া থেকে খাগড়াছড়ি সেনা বাহিনীর রিজিয়নে কল করেন সেখানে থাকা সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিমটি। এ কলে সাড়া দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টারের ডাক পড়ল চট্টগ্রাম থেকে। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট থেকে হেলিকপ্টার উড়ে গেল শিয়ালদহ। এরপর মুমূর্ষু পাঁচ শিশুকে তুলে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে নামিয়ে সেখান থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানোর সব আয়োজন করে সেনাবাহিনী। বেঁচে থাকার আশা জেগে রইল পাঁচ শিশুর।
খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের এক কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, গত ১৬ মার্চ থেকে রাঙামাটি বাঘাইছড়ি সাজেকের শিয়ালদহ, তুইচুই মৌজায় শিশুদের মাঝে হামের প্রাদুর্ভাবের খবর পেয়েছি। এতে ইতোমধ্যে আট শিশু মারাও গেছে। গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনী, রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় শিয়ালদহ ৫৪ বিজিবির সঙ্গে সমন্বয়ে গড়া পাঁচটি মেডিকেল টিম দুর্গম সাজেকে যায়। ওই সময় ওষুধসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার পুষ্টিকর খাদ্য নিয়ে যায় টিমটি।
তিনি জানান, সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ শিশুকে বাঁচাতে হলে জরুরী ভিত্তিতে চট্টগ্রামে নেওয়া দরকার। তাদের জরুরি ভিত্তিতে চট্টগ্রামে নিতে সেনাবাহিনী যা যা করার দরকার তা করেছে। আশঙ্কামুক্ত ১১৬ শিশুদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে এলাকায় হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। শুরু থেকে একমাত্র বিজিবি কাজ করে যাচ্ছিল। এরপর তাদের সঙ্গে সেনা ও স্বাস্থ বিভাগ যোগ দেয়।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন, দুর্গম এলাকা, জনবল সঙ্কট ছাড়াও হাম টিকা গ্রহণের ভীতি, কুসংস্কারের কারণে এসব এলাকায় শিশুদের টিকা আওতায় আনা যায়নি। ফলে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। সেনা, বিজিবি আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি।
এ বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "যাতায়াত ব্যবস্থা দুর্গম হওয়ার কারণে আমি খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নকে চিঠি লিখেছি যেন আমাদের সহযোগিতা করে। তারা সাড়া দিয়েছে। সেখানে পুষ্টিকর খাদ্য নিতে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছি।"