হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির মামলায় জামিন পায়নি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট দীপু
জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চার মামলায় চট্টগ্রামের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট কারাবন্দি মিজানুর রহমান চাকলাদার দীপুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
জামিনের আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জামিন সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও গোলাম আব্বাস চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
গত ২ বছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সাবেক ২ কর্মকর্তার ইউজার আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৭৭৭টি চালান অবৈধভাবে খালাস করা হয়েছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তদন্তে উঠে আসে।
শুল্ক ফাঁকি ও চোরাকারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মিজানুর রহমান চাকলাদারকে (দীপু) আসামি করে গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার রমনা থানায় একটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ওই মামলায় সেদিনই মিজানুর রহমান চাকলাদারকে গ্রেফতার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা।
পরে তার বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়েরের পর ২৩ জানুয়ারি মামলাটি সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে জামিন দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোরশেদ আল মামুন ভুঁইয়া। এই জামিন বাতিল চেয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করে বাদীপক্ষ। আদালত গত ২৫ জুন তার জামিন বাতিল করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
কিন্তু মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পন না করে দায়রা জজ আদালতের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্টে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হবার পর তিনি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন গত ১০ জুলাই।
এরপর তিনি হাইকোর্ট থেকে গত ১৪ জুলাই জামিন নেন। জামিন আদেশের পাশাপাশি এ সংক্রান্ত রুল জারি করেন আদালত। দুদককে রুলের জবাব দিতে বলেছিলেন আদালত।
পরের দিন রাষ্ট্র ও দুদক চেম্বার জজ আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করেছিল।
এরপর গত ২৭ আগস্ট শুনানি শেষে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করে তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন এবং আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার আদালত।
গত ২৭ অক্টোবর আপিল বিভাগ শুনানি শেষে চেম্বার জজের আদেশ বহাল রাখেন। দীপু গত ৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
চারটি মামলায় মহানগর দায়রা জজ আদালত গত ২৮ নভেম্বর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন।
গত গত ১৪ জুলাই দীপুকে জামিন দিয়ে হাইকোর্ট আদেশের সঙ্গে যে রুল জারি করেছিলেন বুধবার তা নিষ্পত্তি করা হলো।