‘ইয়াস’ শব্দের অর্থ জুঁই, এরপরের ঝড় 'গুলাব'
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। অতি প্রবল এই ঝড়টি বুধবার (২৬ মে) দুপুর নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে ওমান। ফার্সি ভাষার শব্দ ইয়াস। ইংরেজিতে এর অর্থ 'জেসমিন', সুতরাং বাংলায় অর্থ দাঁড়ায় জুঁই ফুল।
'ইয়াস' শব্দের অন্য একটি অর্থের কথাও বলা হচ্ছে যদিও। কেউ কেউ বলছেন, এর অর্থ দুঃখ বা হতাশা। আবার ইয়াসের পরে যে ঝড়টি আসবে তার নাম দেওয়া হবে 'গুলাব'। এই নামটি ঠিক করে রেখেছে পাকিস্তান।
গত বছর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল আরেক ঘূর্ণিঝড় আমফানের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। আবার 'ফণী' ঝড়ের নাম দিয়েছিল বাংলাদেশ। 'বুলবুল' নাম ছিল পাকিস্তানের দেওয়া।
একটা সময় বিভিন্ন সংখ্যা দিয়ে ঝড়কে চিহ্নিত করা হত। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে অসুবিধা হত। মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে থাকত সেই সব সংখ্যা। নামকরণের মাধ্যমে প্রতিটি ঝড়কে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি তার সবিস্তার তথ্য নথিভুক্ত করাও সহজ হয়।
ঝড়ের নামকরণের রেওয়াজ খুব বেশিদিন আগের নয়। ২০০৪ সালে শুরু হয়। সে বছর সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম নামকরণও করেছিল বাংলাদেশ। নাম ছিল 'অনিল'।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লুএমও) আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত আটটি দেশ। দেশগুলো হল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান। এই প্যানেলকে বলা হয় ই্কোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (এএসসিএপি)। ভারতের পক্ষ থেকেও এ পর্যন্ত অনেক ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।যেমন- অগ্নি, আকাশ, বিজলি, জল, লহর, মেঘ, সাগর।
তবে নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুসরণ করা হয়। যেমন, এমন নামই দেওয়া হয় যা ছোট হবে এবং সাধারণ মানুষ সহজে উচ্চারণ করতে পারে। যে দেশ নাম রাখবে তার সঙ্গে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হয় সে শব্দ যেন কাউকে আঘাত না করে। কোনও রকম ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ বা আতঙ্ক ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে এমন নামও রাখা যায় না। কোনও ধর্মীয় সম্পর্ক বা ব্যক্তি নামও ব্যবহার করা হয় না।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা