‘শান্তিরক্ষায় নারীর ভূমিকা মূল্যায়ন করতে হলে নিশ্চিত করতে হবে জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবেশ’
যুদ্ধ বা সংঘাত পরবর্তী মানবাধিকার উন্নয়ন ও শান্তি রক্ষা মিশনে নারীদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি দিতে হলে নারীদের জন্য একটি জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক বৈঠকে এ কথা বলেন।
টেকসই শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীরা যেন সম্পূর্ণ সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো পুনঃবিবেচনা করার আহ্বান জানান।
নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা (ডব্লিউপিএস) বিষয় নিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় ভিয়েতনাম সরকারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক বৈঠকে ড. মোমেন এ কথা বলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের নারীদের ভূমিকা উল্লেখ করে পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "আমাদের নারীরা শুধু যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকারই হয়নি, তারা সবার সঙ্গে হাতে হাত রেখে আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণও করেছে।"
তিনি জোর দিয়ে আরও বলেন, সরকার দেশে নারীদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং গৃহস্থালি কাজের বাইরে গিয়েও বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে নারী ক্ষমতায়ন আরও জোরদার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের অভূতপূর্ব উন্নতির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারীদেরকে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছিলেন।
"বর্তমানে নারীরা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন ও বিভিন্ন উন্নয়ন ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিনিধিরূপে কাজ করছে।"
ডা. মোমেন আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে নারীরা নিজ পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের নানা কুসংস্কার দূর করতে কাজ করে যাচ্ছে। সমাজ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের এসব অবদান ও নেতৃত্বকে রাষ্ট্র সর্বোচ্চ সম্মান জানায়।
দেশের নারীরা যেন শান্তি রক্ষায় ও উন্নয়ন কার্যক্রমে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে, সেই ব্যাপারে সরকারের নেওয়া নারী ক্ষমতায়ন উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘের নানা অঙ্গসংগঠন ও আন্তর্জাতিক সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ডব্লিউপিএস এজেন্ডাকে আরও এগিয়ে নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছয়টি নির্দিষ্ট পয়েন্টের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এর মধ্যে রয়েছে, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মধ্যে নারীদের সঠিক অংশগ্রহণ, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে নারীদের মূলধারায় নিয়ে আসা এবং ডব্লিউপিএস এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বরাদ্দের টেকসই বিধান নিশ্চিত করা।
বৈঠকে জাতিসংঘের বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিনিধি শান্তিরক্ষা প্রতিনিধিরা যোগদান করেন।