মঙ্গলবারের একনেক সভায় সংশোধিত মুদ্রণ শিল্প পার্ক প্রকল্পের প্রস্তাব উপস্থাপন
সাড়ে ছয় বছর পর নতুন জায়গায় সরিয়ে নিতে প্রস্তাবিত দেশের মুদ্রণ শিল্প পার্ক স্থাপন প্রকল্প সংশোধন করা হচ্ছে।
নতুন প্রস্তাবনায় ঢাকা-দোহার সড়কের পাশে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের খারসুর মৌজায় ১০০ একর পতিত জমিতে পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। এতে ২৯৯টির বেশি কারখানা স্থাপন করা যাবে।
এর আগে সিরাজদিখানের বড় বর্ত্তা মৌজায় ঢাকা-মাওয়া সড়কের পাশে ৪২ একর জমিতে মুদ্রণ শিল্প নগরী স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল।
সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
বিসিকের কর্মকর্তারা জানান, ভূমির এ জটিলতায় বার বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি। পরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সিরাজদিখানের খারসুর মৌজায় ১০০ একর জমিতে মুদ্রণ শিল্প পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। আর এ কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে ।
ঢাকা ও অন্যান্য স্থানের অপরিকল্পিত মুদ্রণ কারখানাগুলোকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের বড় বর্ত্তা মৌজায় সরিয়ে নিতে ২০১৬ সালে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ হয়। এ মৌজাতে আবার প্লাস্টিক শিল্প নগরী হচ্ছে। প্লাস্টিক শিল্প নগরীর জন্য ৫০ একর জমি চিহ্নিত করার পর মুদ্রণ শিল্প নগরী স্থাপনে দেওয়া হয় ৪২ একর জমি । এতে দুই বছর পার হয়ে যায়।
২০১৮ সালে মুদ্রণ শিল্প নগরীর জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে গেলে, বড় বর্ত্তা মৌজা অধিবাসীরা সরকারি কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করে। ফলে খাস জমিতে বসবারকারীদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়। এসব কারণে পাঁচ বছরে জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান বিসিকের কর্মকর্তারা।
নতুন প্রস্তাবিত জমিতে ২৫টি বাড়ি থাকলেও পতিত জমি হওয়ার কারণে অধিগ্রহণে সমস্যা হবে না বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারকে যথাযথভাবে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিসিক মুদ্রণ শিল্প পার্ক স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, মুদ্রণ শিল্প পার্কের জন্য নতুন করে ভূমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন আগের চেয়ে অনেক কম মূল্যে ভূমি পাওয়া যাচ্ছে। বেশিরভাগ পতিত জমি হওয়ার কারণে সেখানে তেমন ঘরবাড়িও নেই। এ কারণে ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা থাকবে না।
তিনি বলেন, এখন ভূমির পরিমাণ বেড়ে হওয়ায় প্লটের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হবে এবং প্লটের সাইজও বাড়বে। তবে প্লটের প্রকৃত হিসাব জানা যাবে ভূমির মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হওয়ার পর। প্রাথমিক হিসেবে প্লটের সংখ্যা ২৯৯টির বেশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করা যাবে। এই শিল্প পার্কে দুই বছরের মধ্যে বেসরকারি মুদ্রণ শিল্পের উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন বলে জানান বিসিকের কর্মকর্তারা।
প্রস্তাবিত সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে মোট ব্যয় ১৩৮.৭০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭৫.৫০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।