প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা মামলায় কারাবন্দী সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দী সাবেক ছাত্রদল নেতা জাবিদ রায়হান লাকির মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার (২৭ আগস্ট) ভোররাত ১টার দিকে কারাপুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
জাবিদ রায়হান লাকি জেলার কলারোয়া সরকারি কলেজ ছাত্রদল, পৌর ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমতাজুল ইসলাম চন্দন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, কারাগারে থাকাকালীন ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতা লাকি। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেননি। একটি মিথ্যা মামলার রায়ে তিনি সাড়ে চার বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন।
পৃথক আরেকটি মামলাকে কেন্দ্র করে আদালতে হাজির করার জন্য লাকিকে উন্নত চিকিৎসা রেখে খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসা হয়। সাতক্ষীরা মেডিকেলে যথাযথ চিকিৎস না পেয়ে তিনি মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেন মোমতাজুল ইসলাম চন্দন।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মানস কুমার মণ্ডল বলেন, আগে তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। পাশাপাশি, ডায়বেটিক ও ফুসফুসে ইনফেকশনসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন লাকি।
সাতক্ষীরা কারাগারের জেলার মামুনুর রশিদ জানান, লাকি নামের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর শরীরের বাম পাশ অবস ও তার অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিক ছিল। চিকিৎসার জন্য তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ যথাযথ চিকিৎসা করাননি সে কারণে মারা গেছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, "এটি সঠিক নয়। আমরা তাকে এর আগেও খুলনায় নিয়ে গিয়েছি। কেউ মারা গেলে এমন অভিযোগ বাস্তবসম্মত নয়।"
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা, ধর্ষণের শিকার মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যাওয়ার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তার গাড়িবহরের ওপর হামলা করা হয়।
হামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার গাড়িবহরের কয়েকজন আহত হন।
এ ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির তালা-কলারোয়া বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনকে সর্বোচ্চ ১০ বছর এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।