চিকিৎসার জন্য ভারতে খুব বেশি লোক যায় না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসার জন্য খুব বেশি লোক যায় না বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে, তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, "আপনারা কিছুই তৈরি করেননি। গত ১৫ বছরে এ খাতে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর, এমডিজি অর্জন হয়েছে। ভ্যাকসিন হিরো হয়েছে।"
"দেশে ১১১টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে। আপনাদের সময় ১০টাও ছিল না। এখন নার্সিং ইনস্টিটিউট আছে সাড়ে ৩০০। আপনাদের সময় সিট ছিল সাড়ে ৬০০। এখন ৩৪ হাজার নার্সিং আসন রয়েছে।"
তার আগে হারুনুর রশীদ তার প্রশ্নে বলেছিলেন, "বিগত সরকারের দোহাই দিয়ে আর কোনো লাভ নেই। ১৫ বছর টানা আপনারা ক্ষমতায়। দেশে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না বলেই মানুষ প্রতিবেশি ভারতে চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছে। এতে দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হচ্ছে। সেই সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আপনারা স্বাস্থ্যখাতগুলো দুর্বল করে রাখছেন কি না জানি না।"
অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, "দেশে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মিলে ১০ হাজারের মতো রয়েছে। এখানে কিছু কিছু জায়গায় ভালো চিকিৎসা আছে, কিছু জায়গায় দিচ্ছে না। আর অনুমোদনহীনও আছে।"
"সেগুলোর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী চলা অভিযানে প্রায় এক হাজার ৭০০ লাইন্সেসবিহীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি একটা আইন পাস করেছি। যার মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়মের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রয়েছে।"
পরে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ক্ষোভ ঝাড়েন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনেই সারাদেশে ভুয়া, ভেজাল ক্লিনিকগুলো গড়ে উঠছে। যখন গড়ে ওঠে তখন কেউ দেখার থাকে না। কেউ মারা গেলে কিংবা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ওষুধের দাম নিয়ে আরেক সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধের দাম ঔষধ প্রশাসন নির্ধারণ করে দেয়। তার মধ্যে এর কাঁচামাল যেগুলো আমদানি করা হয় এবং অন্যান্য উৎপাদন খরচ ধরে ভ্যাট যোগ করে একটা মূল্য ঠিক করে দেওয়া হয়।
"কিন্তু ওষুধের তার পরের দামটা (ভোক্তা পর্যায়ে) ওষুধ প্রশাসন দেখে না। ভ্যাট নির্ণয়টা সঠিক আছে কি না, সেটা তার এখতিয়ার। এসেনসিয়াল ড্রাগসের ১৩০টির মতো আমরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকি। বাকি শত শত ওষুধের দাম আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। আমরা শুধু ভ্যাট ও উৎপাদন খরচ দেখে থাকি।"
তিনি বলেন, "অনেকেই কাঁচামাল ইউরোপ থেকে আনে। তাদের দাম বেশি। কেউ ভারত ও চীন থেকে আনে, তাদের আবার দাম একটু কম থাকে। তারপরও দামের এত তারতম্য হওয়া উচিত না। আমরা বিষয়টি দেখবো।"
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক কমেছে। টিএফআর আগে ছিল ৬। অর্থাৎ প্রতিটি মা শিশু জন্ম দিত ৬ জন করে। এখন সেটা কমে ২ দশমিক ১। খুলনা ও উত্তরবঙ্গে টিএফআর দুইয়ের নিচে নামছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে একটু বেশি আছে। সেখানে তিনের কাছাকাছি।
তিনি আরও জানান, দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধকল্পে গত ২২ আগস্ট পর্যন্ত ৩২ কোটি ৩১ লাখ ৯ হাজার ৫০০ ডোজ টিকা আমদানি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১২ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার ৫৭৮ জনকে টিকার প্রথম ডোজ, ১২ কোটি ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৭৪০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ ও চার কোটি ২৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৭৭ জনকে তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে।