২৪ দিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকা ভারতীয় ট্রানজিট কন্টেইনার
জাহাজের শিডিউল না থাকায় গত ২৪ দিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় ভারতের চায়ের চালান। ভারতের মেঘালয় থেকে ডাউকি (ভারত)–তামাবিল (বাংলাদেশ) স্থলবন্দর হয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে ৮ মেট্রিক টন ওজনের চায়ের চালানটি।
কবে নাগাদ পণ্য চালানটি জাহাজীকরণ হয়ে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরে পৌঁছাবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেনা শিপিং এজেন্ট। পণ্য চালানটি এমভি ট্রান্স সামুদেরা জাহাজে করে কলকাতায় নেওয়া হবে। কলকাতা থেকে জাহাজটি গত ৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।
কিন্তু ইঞ্জিন ত্রুটি এবং মেরামতজনিত সমস্যার কারণে জাহাজটি কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করতে পারেনি। চট্টগ্রাম-কলকাতা রুটে আর কোনো জাহাজ এই মুহূর্তে না থাকায় ট্রান্স সামুদেরা জাহাজের ওপর নির্ভর করেই থাকতে হচ্ছে ট্রানজিট চালানটিকে।
জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট ম্যাংগো লাইন-এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হাবিব টিবিএসকে বলেন, "জাহাজটি এখন কর্ণফুলী নদীর তীরে বাংলাবাজার এলাকায় মেরামতের কাজ চলছে। কবে নাগাদ মেরামত কাজ শেষ হবে এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে আমাদের প্রত্যাশা এ সপ্তাহের শেষ দিকে মেরামত কাজ শেষ হবে।"
এদিকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বন্দরের ইয়ার্ডে থাকার কারণে কন্টেইনারের স্টোর রেন্ট বাড়ছে। বন্দরে কন্টেইনার রাখার পরবর্তী চার দিন পর্যন্ত ফ্রি রাখার সুযোগ আছে। এরপর ২০ ফুট লম্বা সাইজের একটি কন্টেইনারের জন্য প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন ৬ ইউএস ডলার ভাড়া গুনতে হয়। তার পরবর্তী সপ্তাহ প্রতিদিন একই সাইজের কন্টেইনারে ১২ ডলার এবং ২১ দিন থেকে প্রতিদিন ২৪ ডলার হিসেবে ভাড়া দিতে হয় সংশ্লিষ্টদের।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর ট্রানজিটের আওতায় ভারতের পণ্যের পরীক্ষামূলক পরিবহনের দ্বিতীয় চালানের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে একটি কন্টেইনার। ২৫ টন ওজনের টিএমটি স্টিল (লোহার রড) ভর্তি কন্টেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিলেটের সুতারকান্দি স্থলবন্দর হয়ে ভারতের আসাম রাজ্যে যায়। ফিরতি পথে ওই কন্টেইনারে করে চা পাতা নেওয়া হচ্ছে।
এই দুটি চালান আনা=নেওয়ার মাধ্যমে ৫টি ট্রানজিট রুটের পরীক্ষামূলক ব্যবহার কার্যক্রম শেষ হবে। ট্রানজিট রুট ব্যবহারে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট পণ্য পরিবহন শুরু হবে। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথম চালান আনা হয়।
২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং মোংলা- এই দুটি সমুদ্রবন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত এবং বাংলাদেশ। এছাড়াও পরবর্তীতে দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়।