মোংলা বন্দরে এলপিজি প্ল্যান্টের কাছে যাত্রী পরিবহন ঘাট নির্মাণে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ক্ষেত্র মোংলা বন্দরে দুটি এলপিজি প্ল্যান্টের মধ্যবর্তী স্থানে যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপন এবং সড়ক তৈরির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন ওই যাত্রী ঘাট স্থাপন করা হলে তাতে গ্যাস প্ল্যান্ট এর মত স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে এবং এলপিজি পরিবহনকারী বিদেশী জাহাজও এমন যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপনে আপত্তি উত্থাপন করতে পারে বলে উল্লেখ করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলওএবি)।
গত মাসের শুরুতে এলপিজি প্ল্যান্টের মালিকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি নৌ পরিবহন মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরার পর ঘাট স্থাপনের কাজ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়। কিন্তু গত ১৬ অক্টোবর থেকে অজ্ঞাত কারণে ফের ওই যাত্রী পরিবহন ঘাটের কাজ শুরু হয়েছে, যা তাদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। যে দুটি এলপিজি প্ল্যান্টের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে যাত্রী পরিবহন ঘাট নির্মাণ হচ্ছে তা হলো ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এবং যমুনা স্পেসটেক জয়েন্ট ভেঞ্চার লিমিটেড।
সর্বশেষ ১৮ অক্টোবর নৌ পরিবহন মন্ত্রীকে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আজম জে চৌধুরী আলোচ্য ঘাটের কাজ বন্ধ করা কিংবা অন্যত্র স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে আজম জে চৌধুরী বলেন, ঘাট নির্মাণ হলে কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত এলপিজি ফ্যাক্টরির জেটিসহ পশুর নদীতে নাব্যতা কমে যেতে পারে। রাস্তা নির্মাণ হলে পশুর চ্যানেলের নেভিগেশন ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়তে পারে, যা নৌ দুর্ঘটনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যভুক্ত কিছু প্রতিষ্ঠান মোংলা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় প্ল্যান্ট স্থাপনে বড় বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে ওই এলাকা দেশের বৃহৎ এলপিজি হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এসব প্ল্যান্ট ও স্থাপনা অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. শাহিনুর আলম টিবিএসকে বলেন, "এই এলাকায় ঘাট বা অন্য স্থাপনা হলে ঝুঁকি হতে পারে, খুবই স্বাভাবিক। কেননা এটি একটি ইন্টারন্যাশনাল পোর্ট এবং তা পোর্ট চ্যানেল। এখানে কোন ধরণের ঘাট বা রাস্তা বানানোর লিখিত অনুমতি আমরা দিইনি।"
তিনি বলেন, "বিষয়টি এখন উচ্চ পর্যায়ে আছে। আমরা কোন ধরণের ইনস্ট্রাকশন পাইনি।"
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী বলেন, "ফেরি চলাচলের জন্য সংসদ সদস্যের অনুরোধ এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। পোর্ট (অথরিটি) অনুমতি দিলো কিনা, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আর ফেরির যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে বিদ্যমান সড়কটি কেবল প্রশস্ত করা হচ্ছে, নতুন সড়ক নয়।"
তিনি বলেন, "কিছুটা ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু চ্যানেল প্রশস্ত আছে। আর সারাদিনে ফেরি চলবে সর্বোচ্চ ১২ বার। ফলে সতর্কতার সঙ্গে চললে তাতে অসুবিধা হবে না।"
এছাড়া তা এলপিজি প্ল্যান্টগুলোর জন্যও তা ঝুঁকিপূর্ণ হবে না বলে মনে করেন তিনি।