ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ, আহত ১০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশে গুলিতে মো. নয়ন (২২) নামে এক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
তিনি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি এবং ওই ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে। পুলিশের সাথে সংঘাতের ঘটনায় ছাত্রদল ও যুবদলের আরও অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি নূরে আলম। এরা হলেন- ওসি নূরে আলম, পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফজাল ও বিকিরণ চাকমা এবং কনস্টেবেল শফিক ও বিশ্বজিৎ। তারা বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মুঠোফোনে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক শাহ আজিজ শাওন জানান, রাত সাড়ে ৭টার দিকে নয়নকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নয়নকে মৃত ঘোষণা করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় অনুষ্ঠেয় বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ উপলক্ষে শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের মোল্লাবাড়ি এলাকায় বিএনপি নেতা সাইদুজ্জামান কামালের বাড়িতে প্রস্তুতি সভা করে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠন। পরে সভা শেষে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে রাস্তায় মহাসমাবেশের লিফলেট বিতরণ করার সময় পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি চালায়। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন পেটে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব আতাউর রহমান জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ সময় পুলিশ মিছিলে বাধা দিয়ে তিনজকে আটক করে। পরে আটকদের পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার সময় পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ নয়নের পেটে গুলি করে। এ ঘটনায় আমাদের আরও ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
তবে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি চালায়। তবে নয়ন কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।