মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্পের জন্য পরামর্শক হিসাবে ইজিআইএস ইন্ডিয়াকে নিয়োগ
ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলায় মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ২০১৯ সালে নেওয়া 'আপগ্রেডেশন মোংলা বন্দর প্রকল্প' এর ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংক্রান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর হয়েছে। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ভারতের প্রতিষ্ঠান ইজিআইএস ইন্ডিয়া কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০১৯ সালে নেওয়া প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল পহেলা জানুয়ারি ২০২০ থেকে ৩০ জুলাই ২০২৪। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬,০১৪ কোটি টাকা।
প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা এবং ভারত সরকার সফট লোন হিসাবে দেবে ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা।
প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দর বছরে ১,৮০০টি জাহাজ, এক কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো, চার লাখ টিইইউস কন্টেইনার, ১০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং করতে পারবে।
মোংলা বন্দরের বার্ষিক আয় ১৫০ কোটি টাকা এবং কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার আয় ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপগ্রেডেশন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কন্টেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভেসেল জেটি নির্মাণ, ৮টি জলযান সংগ্রহ, বন্দর আবাসিক কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি সুবিধা নির্মাণ, বন্দর ভবন এবং মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ সম্প্রসারণ, স্লিপওয়ে এবং যন্ত্রপাতিসহ মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণ, দিগরাজে রেলক্রসিং ওভারপাস নির্মাণ, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান সড়ক ৬ লেনে সম্প্রসারণ, বহুতল কার ইয়ার্ড নির্মাণ ইত্যাদি।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, আর্থিক মূল্য ও প্রকল্পের সংখ্যা উভয় দিক থেকেই বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী। বিশ্বব্যাপী ভারতের উন্নয়ন সহায়তার প্রায় এক-চতুর্থাংশ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের বৈচিত্র্যময় নানা প্রকল্পে সম্প্রসারিত হয়েছে। এই দৃঢ় উন্নয়ন সহযোগিতা বৃহত্তর প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অংশীদারত্বের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, মোংলা বন্দর প্রকল্পের মতো বিভিন্ন সংযোগ প্রকল্প সম্পন্ন হলে, তা শুধু ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেই নয়, সমগ্র উপ-অঞ্চলের অর্থনীতিতেও একটি রূপান্তরমূলক প্রভাব ফেলবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন কাজটি সম্পন্ন হলে এটি অনন্য উচ্চতায় চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠবে। এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়; প্রতিবেশী দেশগুলোও উপকৃত হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে মোংলা বন্দর এগিয়ে যাবে।