করোনার টিকা উৎপাদন পরিকল্পনা থেকে সরে এলো ইনসেপ্টা ফার্মা
চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদন পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ায় এ ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুল মুক্তাদির টিবিএসকে বলেন, "যে ভ্যাকসিন উৎপাদন করার প্ল্যান ছিলো তার কার্যকারিতা এখন আর ওয়ার্ল্ডের কোথাও নেই। সিনোফার্মের সাথে একটি চুক্তি হয়েছিলো। এখন আর সে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নেই, তাই আমরা আর সেটি করছিনা।"
আব্দুল মুক্তাদির বলেন, "কোভিড যখন শুরু হয় তখন প্রথম যে ভাইরাসটা ছিলো তার নাম ছিলো উহান ভাইরাস। উহান ভাইরাসের ভ্যাকসিন সিনোফার্ম বানিয়েছে। গত তিন বছরের উহান ভাইরাসটা কমপ্লিটলি ট্রান্সফার্মড হয়ে এখন ওমিক্রন বিএ ৫.২ সহ আরো অনেক ধরনের ভ্যারিয়েন্ট হয়েছে।"
"এখন আর আগের ভাইরাস নেই, তাই কোভিড হলে সিভিয়ার রেসপেরেটারি ডিজিজ আর হয়না। এখন সেই ভাইরাস নেই তাই ভ্যাকসিন আর কার্যকর নয়। সেজন্য সেটি উৎপাদন করার আর কোন প্রশ্ন আসেনা," যোগ করেন তিনি।
নিষ্ক্রিয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন (ভেরো সেল) এর সহ-উৎপাদনের জন্য চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম এবং স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের সাথে ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ।
সমঝোতা স্মারক অনুসারে, ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল আসবে চীন থেকে, এবং সেগুলোকে সম্পূর্ণ ভ্যাকসিনের রূপ দিয়ে বোতলজাত ও লেবেল করবে ইনসেপ্টা। এরপর নির্ধারিত হারে ইনসেপ্টার কাছ থেকে সে ভ্যাকসিন কিনবে সরকার।
এমওইউ স্বাক্ষরিত হওয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, ইনসেপ্টা তিন মাসের মধ্যে প্রায় চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে সক্ষম হবে।
তবে, পরবর্তীতে ইনসেপ্টা এবং সিনোফার্ম দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
তিনি টিবিএসকে বলেন, "কোভিডের সংক্রমণ কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে আগ্রহ নেই। কোম্পানিগুলো তো লাভের দিকটা দেখবে। ওরা যদি দেখে মার্কেট নেই তাহলে কেনো আর টাকা ইনভেস্ট করবে?"
তিনি আরো বলেন, "এখন সরকার নিজে ভ্যাকসিন উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। জমি কেনা কনসালটেন্ট নিয়োগ করাসহ অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এখন আর বিদেশি কোম্পানির ভ্যাকসিন এনে বোতলজাত করার বিষয়টি ফিজিবল নয়। এছাড়া আমাদের হাতে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিনের ফোর্থ ডোজ দিচ্ছি আমরা।"
এখন পর্যন্ত, ১৪ কোটি ৯৮ লাখ (মোট জনসংখ্যার ৮৮.০১%) বাংলাদেশি কোভিড ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। কমপক্ষে ১২ কোটি ৮৯ লাখ মানুষ একটি টিকা পদ্ধতি সম্পন্ন করেছে। বুস্টার ডোজ পেয়েছে ৬ কোটি ৫৮ লাখ মানুষ; ৪র্থ ডোজ পেয়েছে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন।