সারের দাম বাড়ানো হবে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষি উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশে সার, বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়ান হবে না।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাভারের ব্র্যাক সিডিএম মিলনায়তনে সার্কভুক্ত দেশসমূহে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ নেটওয়ার্ক (বায়েন) ও ভারতের পার্টিসিপেটরি রুরাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ সোসাইটি (প্রাডিস) যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নীতি হলো যেকোন মূল্যে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ও খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা। সেজন্য, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়ে যত কষ্টই হোক সরকার বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়াবে না।
তিনি বলেন, 'অন্যান্য খাতে যে পলিসিই নেয়া হোক না কেন, কৃষিখাতে বিশাল ভর্তুকি প্রদানসহ সকল সহযোগিতামূলক নীতি অব্যাহত থাকবে। কৃষি উৎপাদন টেকসই করতে যা যা করা দরকার, তা অব্যাহত থাকবে'।
তবে কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম যে হারে বাড়ানো হচ্ছে, সেটার প্রভাবটাও সরাসরি কৃষির উৎপাদনের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমেই কৃষকদেরকে এই বাড়তি খরচের চাপ বইতে হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, 'আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না, ইনশাল্লাহ এ গ্যারান্টি দিতে পারি'।
ফসলের গবেষণা ও সম্প্রসারণের মধ্যে বিরাট ব্যবধান রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গবেষক/বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত জাত, গবেষণা পর্যায়ে যার বিঘাপ্রতি ৮ মণ উৎপাদন হয়, সেটি সম্প্রসারণের পর কৃষক পর্যায়ে দেখা যায় উৎপাদন হয় বিঘাতে ৩-৪ মণ। 'এটি কেন হবে, এই বিশাল গ্যাপ কমিয়ে আনতে হবে'।
মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি খুবই ধীরে সম্প্রসারণ বা কৃষকের কাছে পৌঁছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ধান, সরিষাসহ অনেক ফসলের কতগুলো উন্নত উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন। এদের মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। কিন্তু, এগুলো মাঠে কৃষকের কাছে খুবই দেরিতে যাচ্ছে। 'এত দেরিতে মাঠে যাওয়ার কারণ কি, তা সম্প্রসারণকর্মীদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদেরকে আরো আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে'।
কৃষি সম্প্রসারণকর্মীদের তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের ৩৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন।