মেট্রোরেল স্টেশন কেন্দ্রিক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নে ঢাকা উত্তর সিটিকে ১৬০০ কোটি টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক
রাজধানী ঢাকার মেট্রোরেল স্টেশন কেন্দ্রীক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন, খালের পাশে ওয়াকওয়ে তৈরি এবং ইলেকট্রিক বাস ক্রয়ে ১৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা) লোন দিতে সম্মতি প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
যাত্রী ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকান মিরপুর-১২ থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনকে সমন্বিত যোগাযোগ কেন্দ্র বানাতে ঢাকা উত্তর সিটির সাথে 'ইন্টেগ্রেট করিডরস ম্যানেজমেন্ট (আইসিএম)' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কাজ করবে বিশ্ব ব্যাংক।
সোমবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ভাইস প্রেসিডেন্ট গোয়াংঝে চেন এর সাথে বৈঠক করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। বৈঠক শেষে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আতিকুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা বিশ্বব্যাংকের এ প্রকল্পের আওতায় কাজ সম্পন্ন করতে পারলে ঢাকা উত্তর সিটির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। একইসাথে ফুটপাত, সাইকেল লেন, গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা, খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে তৈরী করা হবে। এছাড়া গণপরিবহনে ৫০টি ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে প্রজেক্টের আওতায়।"
"সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করি এবছরের নভেম্বরে কাজ শুরু করতে পারবো। ঢাকাতে এটি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে আমরা কাজ করবো," যোগ করেন তিনি।
মেয়র আরও বলেন, "সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক এ সংকটকালে বিশ্ব ব্যাংক এতো টাকা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এটাই আমাদের বড় পাওয়া। যদি এ পাইলট প্রকল্পে আমরা সফল হতে পারি তবে ধীরে ঢাকার অন্য এলাকাগুলোতেও অর্থায়ন করবে বিশ্ব ব্যাংক।"
প্রজেক্ট সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি দলে থাকা উত্তর সিটির চিফ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "আমাদের মেট্রোরেলের নিচের রাস্তার ইন্নয়ন হলেও মেট্রোরেল স্টেশনের সাথে সংযোগ সড়কগুলো দিয়ে আসা-যাওয়ায় এখনও তেমন ভালো কোন ব্যবস্থা নেই। কিন্তু, পৃথিবীর উন্নত শহরে মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের আসা-যাওয়ায় সমন্বিত করিডোর ব্যবস্থাপনা থাকে।"
"সেই আদলে ঢাকার মেট্রো স্টেশনগুলোকে বহুমুখী যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে বিশ্বব্যাংক। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরে আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদনের কথা রয়েছে," বলেন তিনি।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বলছে, এই টাকা ছাড় পেলে মিরপুর-১২ থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত মেট্রোরেলের অংশে সমন্বিত করিডোর ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। আশপাশের সংযোগ সংযোগ সড়ক ও ফুটপাত সংস্কার করা হবে। স্টেশনে যাত্রী আনা-নেওয়ায় নামানো হবে ইলেকট্রিক বাস।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আয়োজিত 'ট্রান্সফরমিং ট্রান্সপোর্টেশন ২০২৩: অ্যাক্সেলারেটিং টুয়ার্ড গ্রিন অ্যান্ড ইনক্লুসিভ মোবিলিটি' সম্মেলনে ঢাকার বাস্তবতায় আগামীর গণপরিবহন নিয়ে বক্তব্য রাখার কথা মেয়র আতিকুল ইসলামের।
এতে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়সহ আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে মতামত রাখবেন।
১৪-১৫ মার্চ এ দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের ২০তম সংস্করণ এই ট্রান্সফরমিং ট্রান্সপোর্টেশন ২০২৩।
এই সম্মেলনে ট্রান্সপোর্টের পেশাদাররা নতুন ও উদ্ভাবনী উপায় বের করতে আলোচনা করবেন। তাছাড়া, সম্মেলনে অনেকে ভার্চুয়ালিও অংশ নিতে পারবেন।
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধার এবং কপ২৭ এর প্রতিশ্রুতিগুলোকে সবার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, টেকসই এবং যথাযথ করে তুলতে পরিবহন-বিষয়ক পদক্ষেপগুলো পুনর্বিবেচনা করার উপরই জোর দেওয়া হবে এ সম্মেলনে।