খুলনায় অবস্থান কর্মসুচির আগে ১৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, দাবি বিএনপির
শনিবার (১ এপ্রিল) খুলনায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির আগেই শুক্রবার রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলটি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৬ নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বয়াক শফিকুল আলম মনা বলেন, "কোন কর্মসুচি আসলেই খুলনার পুলিশ সদস্যরা গ্রেপ্তারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।"
অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন: খুলনা মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাসুদ খান বাদল, ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল হক, ১৫নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল খন্দকার, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরমান, যোগীপোল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আবু, আড়ংঘাটা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ মিশ্র, মহানগর ছাত্রদলের রশিউর রহমান রুবেল, খানজাহান আলী থানা যুবদলের মেহেদি হাসান বাপ্পী, ২২ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো: জহির শেখ, ২ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা শাহাদাৎ হোসেন সাজু, ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক কুদ্দুস শেখ, সিটি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হাসান।
খুলনা মহানগর বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসুচি পালন করবে। নগরীর কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয় সামনে এ কর্মসুচি পালিত হবে।
অবস্থান কর্মসুচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এড. নিতাই রায় চৌধুরি।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বয়াক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, "আমাদের নেতাকর্মীদের মহানগরীর বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে সংযমের কথা উল্লেখ থাকলেও সরকার সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে জনগণের বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার হরণ করেছে।"
"মামলা ছাড়াই বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দেশকে আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। হরহামেশা ভিন্নমতের মানুষকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে জুলুম-নিপীড়ন চালাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।
দলীয় এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি ইউনিট যৌথভাবে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে আজ দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
একইসময়ে দেশের অন্যান্য শহর ও জেলা শহরেও একই কর্মসূচি পালন করবেন দলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি ছাড়াও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, পেশাজীবি গণতান্ত্রিক জোট, ১২ দলীয় জোট, লেবার পার্টি, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও এলডিপিও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে।
তবে দীর্ঘদিন ধরে একযোগে কর্মসূচি পালন করে আসা গণতন্ত্র মঞ্চ আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে না।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা জানান, রোববার বিএনপির সঙ্গে তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তারা পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন।
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিন্ন লক্ষ্যে গত বছরের ডিসেম্বরে একযোগে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি ও সমমনা দল।
এ পর্যন্ত তারা ১০ দফা দাবি আদায়ে দেশের সব ইউনিয়ন, জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও রোডমার্চ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।