খুলনায় বিএনপির ৮৫৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
খুলনায় পুলিশের সাথে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় ৮৫৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ৫৯ জনকে এজাহার নামীয় ও ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। এ মামলায় এজাহার নামীয় প্রথম ৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
শনিবার রাতে খুলনার সদর থানায় এসআই অজিত কুমার দাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল-মামুন।
মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- খুলনার রূপসা উপজেলার যুগিহাটি গ্রামের ইশারাত ইসলাম (২৩), দিঘলিয়া উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের শেখ কামাল উদ্দিন (৪৭), মহানগরীর রুপসা স্ট্যান্ড রোডের মোঃ জালাল হোসেন (৩৫), রূপসা উপজেলার চর-রুপসা গ্রামের মোঃ রাজু শেখ (২৮), মহানগরীর থানা-খানজাহান আলী থানার ফুলবাড়িগেট এলাকার আব্দুল হাই রুমি (৪৬) ও দেলোয়ার হোসেন জসিম (৩৪), ফুলতলা উপজেলার পয়গ্রাম গ্রামের মিজানুর রহমান (৩২)। তাদের কাছ থেকে ১৫ টুকরা ভাঙ্গা ইটের খন্ড, ৯টি কাঠের আছাড়ি ও ৭টি লোহার রড জব্দ দেখানো হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, "শনিবার দুপুর ৩টায় খুলনা থানাধীন কে ডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল।আকস্মিকভাবে বিএনপির নেতৃত্বে লাঠিসোটা, লোহার রড, কাঠের বাটা, ইট-পাটকেল, দেশী অস্ত্রশস্ত্র ও বাঁশের লাঠি নিয়ে মিছিলসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে জনমনে ভীতি, দোকানপাট ভাংচুর করতে উদ্যত হয়, যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে চরম মারমুখী অবস্থায় পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা প্রদান করে। এসময়ে তারা পরিকল্পিতভাবে পুলিশের উপর হামলা করে গুরুতর ও সাধারণ জখম করে।"
এজাহার মতে, বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় সেখানে দায়িত্বরত এসআই মোঃ সাইদুর রহমান, মোঃ আব্দুল হাই, মোঃ অলিয়ার রহমান, সনজিত কর্মকার, মোঃ শান্তিরাম পাল, মোঃ আব্দুস সালাম, মোঃ শাকিম হোসেন, মোঃ রিপন শেখ, নায়েক তুহিন ও এসএএফ মোঃ শাহিন আহত হয়।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনায় অবস্থান কর্মসূচি পালনের কথা ছিল বিএনপির। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এড. নিতাই রায় চৌধুরী।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্ববায়ক কমিটির সদস্য (মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান মিলটন বলেন, "আমাদের কর্মসুচি পন্ড করতে বেলা ১১টা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ উপস্থিত হতে থাকে। বেলা ২টার দিকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করলে পুলিশ হঠাৎ করে লাঠিপেটা, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু করে। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী হামলা চালানো হয়।"
তিনি জানান, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে ঘাটভোগ ইউনিয়ন বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ কবির শেখ, রূপসা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রুবেল মীর, বটিয়াঘাটা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব বাহাদুর মুন্সী, ডুমুরিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক শাহিন মোল্লা, ডুমুরিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক তামিম মোল্লা, খুলনা জেলা যুবদলের সাজু হাওলাদার, খুলনা জেলা ছাত্রদলের মনিরুজ্জামান নয়ন হাওলাদার, ইয়াসিন, ফিরোজ মাহমুদ, ইসমাইল হোসেন, ইবাদুল হক রুবায়েত, ইস্তিয়াক আহমেদ ইস্তিসহ ১৫ থেকে ২০ গুরুতর আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, "শনিবারের এ কর্মসূচির আগে ২৪ ঘণ্টায় ১৬ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাংবিধানিকভাবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি পালনের অধিকার আছে। কিন্তু পবিত্র রমযান মাসে রোজাদার বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নারকীয় তান্ডব কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দমন-নিপীড়ন করে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।"