কক্সবাজারে ঝড়ো হাওয়া ও থেমে থেমে বৃষ্টি, আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ মানুষ
কক্সবাজার উপকূলজুড়ে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া ও থেমে থেকে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ঝড়ো হাওয়ার সবচেয়ে বেশি তীব্রতা সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এ পরিস্থিতিতে জেলার ৩ লাখ মানুষ নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়ে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার সকাল থেকে কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল ৯টার পর থেকে ঝড়ো হওয়া শুরু হয়, যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, থেমে থেমে মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঝড়ো হাওয়ার তীব্রতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পর্যন্ত দ্বীপের কিছু গাছপালা ভেঙ্গে পড়ার খবর পাওয়া গেলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আশ্রয় কেন্দ্রে দ্বীপের ৭ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
সেন্টমার্টিনের ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, সাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে পানির উচ্চতা বেড়েছে। তবে দ্বীপের কোন অংশ প্লাবিত হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় তিন লাখ মানুষ এসে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রধান বিভীষণ কান্তি দাশ।
তিনি জানান, সরকারিভাবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ এসেছে। এর বাইরেও বিভিন্ন স্থানে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় তিন লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, "কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে। এখনও যারা বাইরে আছে তাদেরকে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, দুপুরের পর থেকে ঝড়টি উপকূলের স্থলভাগ অতিক্রম করা শুরু করবে। সেই কথা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।"
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ১০ থেকে ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে জানিয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রধান বলেন, এর মধ্যে সিপিপির প্রায় আট হাজার ৬০০ এবং রেড ক্রিসেন্টের দুই হাজার ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি শেল্টার সেন্টারে আলাদা করে স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধিদের আলাদা করে কমিটি রয়েছে, তারা কাজ করছেন।
সেন্টমার্টিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভীষণ দাশ বলেন, সেখান থেকে আসা সবশেষ খবর অনুযায়ী, আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজন নিরাপদে আছে; তবে বৃষ্টি হচ্ছে এবং বাতাসের বেগ বেড়েছে। খারাপ কোনো সংবাদ আমরা সেখান থেকে এখনও পাইনি।
রোববার সকাল থেকে কক্সবাজার শহর ও টেকনাফে যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি চলছিল তা অব্যাহত আছে। তবে কখনও কখনও মাঝারি বৃষ্টিপাতও হচ্ছে।
ফলে জেলা শহরের রাস্তাঘাটে যানবাহন ও লোকজনের চলাচল কমে গেছে। দোকানপাট দেরিতে খুলেছে এবং অফিস-আদালতেও উপস্থিতি কম দেখা গেছে।