রাজস্ব বাড়াতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে আগ্রহ নেই রাজস্ব বোর্ডের: প্রতিমন্ত্রী
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রয়োজনীয় সংস্কারে আগ্রহ না থাকায় দেশের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ছে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
তিনি বলেন, "যদিও প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায় না হওয়ায় এককভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দায়ী করার সুযোগ নেই। তবে সংস্কার এগিয়ে নিতে এনবিআরের আগ্রহের অভাব রয়েছে।"
এডিটরস গিল্ডের আয়োজনে শনিবার (৩ জুন) রাজধানীর একটি সম্মেলন কেন্দ্রে 'বাজেটে ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজেটের ব্যয় মেটাতে করের আওতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী শামসাল আলম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের ভেতরে ও বাইরে থেকে বলা হচ্ছে, জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আহরণের হার বাড়ানো দরকার।
যদিও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের টিআইএন থাকে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এই নেট বাড়নোর অংশ হিসেবেই ই-টিআইএন রিটার্ন দাখিলে ২,০০০ টাকা কর আরোপ করা হয়েছে।"
রাজস্ব আহরণে ব্যর্থ্যতার দায় এককভাবে এনবিআরে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে।
বাজেটে লক্ষ্য নির্ধারণে এনবিআরের মতামত নেওয়া হয় না এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বাজেট প্রণয়নের শুরুর দিকেই বিভিন্ন পক্ষের পাশাপাশি এনবিআরকে ডাকা হয়।
"সরকারের নীতিগত দলিল, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় রাজস্ব কাঠামোতে যে ধরনের সংস্কারের কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবায়নে এনবিআর উদ্যোগী হয় না। তারা আবার পরামর্শ কী দেবে?," প্রশ্ন রাখেন তিনি।
২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান অনুষ্ঠানে বলেন, "জিপিডির বড় প্রবৃদ্ধির স্বপ্নবিলাস দেখানোর চাইতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা ও সামষ্টিক অর্থনীতিকে ট্র্যাকে নিয়ে আসার উদ্যোগ বেশি প্রয়োজন ছিল।"
তিনি বলেন, রাজস্ব খাতের সমস্যা, ব্যাংকিং খাতে সংকট, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিসক্যাল ও মনিটারি পলিসির পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ বাজেটে নেই।
বড় প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বিশাল হারে বাড়ানের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। আবার ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে বিশাল ব্যয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এই দুই লক্ষ্যের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আয়োজক সংগঠন এডিটরস গিল্ডের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী নেতদের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা ১ জুন তারিখে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।