ঋণ কেলেঙ্কারি: বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দুদকের
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগের ৫৯টি মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
প্রথম মামলা করার সাত বছর পর দুই হাজার ২৬৫ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে অবশেষে দুদক অভিযোগপত্রের অনুমোদন দিলো।
আজ সোমবার (১২ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বেসিক ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে সবকটি মামলার অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
সচিব জানান, ৫৯টি মামলায় ব্যাংকের ১০১ জন গ্রাহক ও ৪৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসব মামলা দুদকের পাঁচজন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই শেষে কমিশন এসব মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে।
মো. মাহবুব হোসেন জানান, আজ বিকেলে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি ৫৬ মামলার একটিতেও দুদক অভিযোগপত্র দিতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত। একইসাথে একমাসের মধ্যে ৫৬ মামলার অগ্রগতি সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন দুদককে।
২০২২ সালের নভেম্বরে বেসিক ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীর তিনটি জামিন শুনানির সময় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে বলেন: কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কিন্তু, দুদক এবং এত বিচারক ও আইনজীবী থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা (দুদক) নীরব কেন? এটা অনেকটা নাটকের মতো। আমরা নাটক দেখছি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে শেখ আবদুল হাই বাচ্চু চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত বেসিক ব্যাংক নিয়ম ভেঙে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়।
তদন্ত প্রতিবেদনটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ২০১৩ সালে দুদকে পাঠানো হয়। পরে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় ১২০ জনের বিরুদ্ধে ৫৬টি মামলা দায়ের করে সংস্থাটি।
পরে ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আরও ৩টি মামলা যোগ হয়। এসব মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ মোট ১৫৬ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় দুই হাজার ৩৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।