ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল ৮০ থেকে ৪০০ টাকা: ওবায়দুল কাদের
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলে যানবাহনের শ্রেণিভেদে সর্বনিম্ন ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা টোল ধরা হয়েছে। রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সেতুমন্ত্রী বলেন, "এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলে যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, শ্রেণী-১ এ কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের কম) ৮০ টাকা, শ্রেণী-২ এ মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, শ্রেণী-৩ এ ট্রাক (৬ চাকার বেশি) ৪০০ টাকা, ক্যাটাগরি-৪ এ ১৬ বা তার বেশি আসনের সব ধরনের বাসের টোল ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেতুমন্ত্রী জানান, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের আরও জানান, আগামী ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আবার একই মাসের ২০ তারিখে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল অংশের উদ্বোধন করবেন তিনি। তার আগে ১৬ সেপ্টেম্বর সাভারে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রোডের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়াও, আগামী ২২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ১৪০টি সেতু এবং তেজগাঁওয়ের নবনির্মিত সড়ক ভবন থেকে ১২টি ওভারপাস ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন।
"এদিন সড়ক নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি ক্ষতিপূরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন", বলেন ওবায়দুল কাদের।
"দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ৫ লাখ টাকা এবং যারা পঙ্গু হয়েছেন তারা ৩ লাখ টাকা করে পাবেন। এ বিষয়ে নিয়ম তৈরি হয়ে যাওয়ার পর উপযুক্তদেরকে এই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে", যোগ করেন তিনি।
এদিকে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের সময় নিয়ে উদ্বেগের প্রসঙ্গে যেকোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য জড়িয়ে থাকার কথা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ প্রকল্পগুলো নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে গৃহীত।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত চার লেনের ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য ২০১১ সালে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এক্সপ্রেসওয়ের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার, র্যাম্পসহ দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
তিনটি ধাপে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এই ধাপে ১৫০০ পাইলের মধ্যে ১৪৫২টি পাইলের, ৩৫০টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ২৬০টির, ৩৫০ কলামের মধ্যে ২২৭টি কলামের, ৩৫০টি ক্রস বিমের মধ্যে ১৪৯টির এবং ৩ হাজার ১৫৪টি আই গার্ডারের মধ্যে ৬০৫টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ অংশের ৫৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপ বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত এবং তৃতীয় ধাপে মগবাজার রেলক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে।