লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি
আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে দেশব্যাপী লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি তার সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের অংশগ্রহণে দেশের বিভিন্ন স্থানে তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি শুরু করবে বলে জানা গেছে দলীয় সূত্রে।
এছাড়া চলতি মাসে পর্যায়ক্রমে সমাবেশ ও গণমিছিলের মতো কর্মসূচিও ঘোষণা করবে দলটি। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তাদের কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় তারুণ্যের সমাবেশের কর্মসূচি তৈরি করেছে দলটি। ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর, সৈয়দপুর ও দিনাজপুরে; ১৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া, সান্তাহার, নওগাঁ ও রাজশাহীতে; ২১ সেপ্টেম্বর ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেটে; ২৬ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ, যশোর, নোয়াপাড়া ও খুলনায় এবং কুমিল্লা, ফেনী, মিরসরাই ও চট্টগ্রাম রোডে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তারুণ্যের সমাবেশ করবে বিএনপি।
তারুণ্যের সমাবেশের পাশাপাশি প্রতি শুক্র ও শনিবার ঢাকায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, সমাবেশ ও গণমিছিল করবে দলটি।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, "সময় খুব কম, আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাই। আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।"
আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, "আসুন, জাতি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করি।"
এর আগে, গত ২৮ জুলাই ঢাকায় বিএনপির বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এইদিন দলটি ২৯ জুলাইয়ে রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা দেয় এবং নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকাত্যাগ না করতে বলে। সেদিন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে সহিংসতার মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শেষ হয়।
এরপর পুলিশের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগ এনে ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের হওয়ার কারণে বিএনপির আন্দোলন কিছুটা পিছিয়ে যায়।
বিরোধীদলীয় নেতারা বলছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাম্প্রতিক সময়ে দলের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বেশ কিছু ভুলত্রুটি চিহ্নিত করেছেন। বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের শিথিল মনোভাবের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, "চলমান আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে রয়েছি আমরা, যা শীঘ্রই দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। এবারের কর্মসূচি সরকার উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত চলবে।"
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, "আগামী শনিবার থেকে সরকার উৎখাতের কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে, এতে কোনো বিরতি থাকবে না। সরকার উৎখাত হলেই এই আন্দোলন শেষ হবে।"