পরিকল্পনার অভাবে সরকারের আয়-ব্যয়ে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিচ্ছে: অর্থ বিভাগ
সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিচ্ছে বলে উঠে এসেছে অর্থ বিভাগের মূল্যায়নে।
বিভাগ বলছে, অর্থবছরের শেষের দিকে ব্যয়ের চাপ বেড়ে যাওয়ায় অপরিকল্পিত ঋণ ও ঋণজনিত ব্যয় সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যায় না।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) অর্থ বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করেছে। সেখানে সময়মত বাজেট বাস্তবায়নের জন্য অর্থবছরের শুরুতে সুনির্দিষ্ট ও সময়নিষ্ঠ পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে আগামী ৮ অক্টোবরের মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো থেকে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা চেয়েছে অর্থবিভাগ। পাশাপাশি, প্রত্যেক প্রান্তিক শেষ হওয়ার পরবর্তী এক মাসের মধ্যে বাজেট বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন অর্থ বিভাগে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন তৈরি করতে অর্থ বিভাগ ৮টি ফরম তৈরি করেছে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগুলো এখন থেকে ওইসব ফরম ব্যবহার করে পরিকল্পনা প্রস্তুত করবে।
এছাড়া, অর্থ বিভাগ মন্ত্রণালয়গুলোকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ব্যয় পরিকল্পনা করারও পরামর্শ দিয়েছে। বাজেটে ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য আলাদা পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে।
অর্থ বিভাগ বলছে, প্রত্যেক মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে আগের মাসের ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হবে। সে অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ করতে হবে। সরবরাহ ও সেবা খাতের ব্যয় নির্ধারণের জন্য আগের বছরের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বরাদ্দ দিতে হবে।
অর্থবছরের শুরু থেকে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এমনভাবে শুরু করতে হবে, যাতে প্রতি ত্রৈমাসিকে এই বাবদ একই ধরনের বিল হয়। সম্পদ সংগ্রহ ও কেনার ক্ষেত্রে সংগ্রহ পরিকল্পনা করতে হবে।
অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট সিস্টেম (আইবিএএস++)-এর মাধ্যমে বাজেট প্রণয়ন করছে। সবক্ষেত্রে বাজেট বাস্তবায়ন মডিউল চালু করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোও যথেষ্ঠ দক্ষতা অর্জন করেছে।
এরপরও সময়মত ও সুষ্ঠু বাজেট বাস্তবায়ন এখনও একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ।
অর্থ বিভাগ ও বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের যৌথ উদ্যোগে করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট সিস্টেম (আইবিএএস++) বাস্তবায়নের ফলে আগামী পাঁচ বছরে দেশের আনুমানিক ৫৯ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।