৩৯ জেলায় ১৫০ সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
সারা দেশে ১০০ সেতু চালু হওয়ার এক বছরের কম ব্যবধানে ১৯ অক্টোবর আরও দেড়শ সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ৩৯ জেলায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (আরএইচডি) নির্মাণ করা এ সব সেতুর পাশাপাশি বিভিন্ন মহাসড়কে ১৪টি ওভারপাস একযোগে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, একই দিনে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিসির ময়মনসিংহ বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
ময়মনসিংহের কেওয়াটখালীতে দেশের প্রথম বৃহৎ স্টিল স্ট্রাকচারের আর্চ সেতু ও রহমতপুর সেতু নির্মাণেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের কাজও শুরু হবে একই দিনে।
জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী টিবিএসকে বলেন, এক দিনে দেড়শ সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে উদ্বোধনের নতুন মাইলফলক স্থাপন হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সব সেতুর সুবাদে সড়কে যানবাহনের গতি বৃদ্ধির সঙ্গে যানজট এবং ভোগান্তি কমে আসবে। এর ফলে এক দিকে মানুষের সময়ের সাশ্রয় হবে, অন্য দিকে পরিবহনে ব্যয় কমে আসায় ব্যবসা-বাণিজ্যও সহজ হবে।
সচিব আরও বলেন, মহাসড়কের ওপর দিয়ে সংযোগ সড়ক চলে যাওয়ায় অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। আবার স্থানীয় লোকজনও সড়ক পারাপারে সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। ওভারপাসগুলো সড়কে দুর্ঘটনা কমানোর পাশাপাশি স্থানীয়দের ভোগান্তি কমাতে সহায়ক হবে বলেও মনে করেন তিনি।
সূত্র জানায়, উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা সেতুগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০টির অবস্থান ময়মনসিংহ বিভাগে। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ৩২টি, চট্টগ্রামে ২৭টি ও রাজশাহীতে ২২টি, খুলনায় ১২টি, বরিশাল ও রংপুরে ৮টি করে এবং সিলেট বিভাগে ১টি সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
নতুন চালু হতে যাওয়া ১৫০ সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯.৪৫ কিলোমিটার। আর উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা রাজশাহী বিভাগের আটটি ও রংপুর বিভাগের ছয়টি ওভারপাসের মোট দৈর্ঘ্য ৬৮৯ মিটার।
উত্তরবঙ্গের যানজট নিরসনে ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫) সহ বেশ কয়েকটি মহাসড়কে নির্মিত ১৪টি ওভারপাসের মধ্যে ৮টি অবস্থিত রাজশাহী বিভাগে আর ৬টির অবস্থান রংপুর বিভাগে।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় তিতাস সেতুর দৈর্ঘ্য ৫৫৮.২১ মিটার। এর বাইরে ৪০২.৬১ মিটার দৈর্ঘ্যের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক সুরমা সেতু, বগুড়ার ২৯৮.৮০ মিটার দীর্ঘ আড়িয়ারঘাট সেতু, ১৯৩.৩০ মিটার দীর্ঘ ঢাকা জেলার নয়ারহাট সেতু উদ্বোধন হবে।
বিভিন্ন মহাসড়কে অবস্থিত জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলী সেতু প্রতিস্থাপন করে নির্মাণ করা নতুন ১৫টি আরসিসি সেতু উদ্বোধন হচ্ছে। এর মধ্যে গাজীপুরের ১৮৭.১৮ মিটার দীর্ঘ চাপাইর সেতু ও নারায়ণগঞ্জের ১৪৯.৮৭ মিটার দৈর্ঘ্যের রামচন্দ্রী সেতু উল্লেখযোগ্য।
দেশের সীমান্ত ঘেঁষে বিস্তৃত সড়ক নেটওয়ার্ককে সচল করতে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার সীমান্ত সড়কে ১৯টি নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
তাছাড়া জামালপুর জেলায় রৌমারী স্থলবন্দর জামালপুর— ধানুয়া কামালপুর-কদমতলা (রৌমারী) জেলা মহাসড়কে পাঁচটি সেতু ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে সহায়ক হবে বলে মনে করে সেতু বিভাগ।
জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সহায়তায় ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এর আওতায় ১৬টি সেতু উদ্বোধন হচ্ছে।
একই সংস্থার অর্থায়নে চলমান ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রীজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এর আওতায় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নির্মিত ২১ সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে (এডিবি) সহযোগিতায় চলমান এলেঙ্গা- হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় ১৪ সেতু উদ্বোধন হচ্ছে।
একই প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলায় মোট ১৪টি ওভারপাসও উদ্বোধন হবে ১৯ অক্টেবর।