বঙ্গবন্ধু টানেলে প্রথম দিনে ১২ লাখ টাকার বেশি টোল আদায়, যান পারাপার ৫ হাজার ৩২৯টি
চালুর প্রথম দিনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে পাঁচ হাজার ৩২৯টি গাড়ি পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ টাকা। গতকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত এই টানেল।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) এর তথ্যমতে, টানেল চালুর দিন বিএনপির ঘোষিত হরতাল থাকায় শুরুতে যানবাহন চলাচল ছিল প্রত্যাশার তুলনায় কম। সকালে কম থাকলেও বিকাল থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। এর মধ্যে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় দুই হাজার ৬৪ যানবাহন টানেল দিয়ে কর্ণফুলী নদী পার হয়। ওই সময় মোট চার লাখ ৪১ হাজার ৬৯০ টাকা টোল আদায় হয়।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, রোববার হরতালের কারণে টানেলে যাওয়া যানবাহন কম ছিল। এরপরও রোববার ভোর ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৩২৯টি যানবাহন উভয় পথ দিয়ে টানেল পার হয়েছে। ধীরে ধীরে টানেল ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
জানা গেছে, টানেল উদ্বোধনের পর প্রথম বছর দৈনিক ১৭ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচলের প্রাক্কলন করা হয়েছিল। টানেল প্রকল্প বাস্তবায়ন এক বছর পিছিয়ে যাওয়ার পরও শুরুতে যানবাহনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে টানেলকে সামনে রেখে কর্ণফুলী নদীর উভয় পাশে প্রয়োজনীয় সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ না হওয়ায় টানেলে আশানুরূপ যান চলাচল হচ্ছে না।
এদিকে গতরাত তিনটায় অতিরিক্ত গতির কারণে একটি গাড়ি টানেলের আইল্যান্ডে আঘাত করে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টানেলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা বলছেন, 'আমরা গাড়িটি সনাক্ত করে জরিমানায় আওতায় আনবো।'
গত শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সড়ক টানেলের উদ্বোধন করেন। এর নির্মাণব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার ও চীনা অর্থায়নে নির্মিত টানেলটি চট্টগ্রামের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে।
টানেলের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব রক্ষায় ব্যবহারকারীদের জন্য এর মধ্যে ১৪টি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে বিবিএ। টানেল ব্যবহারে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮০ কিলোমিটার হলেও ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। ভূমি হতে ৪ দশমিক ৯ মিটারের বেশি মালামাল সহ যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। গাড়ির বডির চেয়ে বেশি চওড়া যানবাহন, বাড়তি ওজন ও স্বাভাবিক এক্সেল লোডের অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি টানেলে প্রবেশের সময় সার্বক্ষণিক যানবাহনের লাইট জ্বালিয়ে রাখা, ওভারটেক না করা সহ অন্যান্য নির্দেশনা জারি করেছে বিবিএ।