চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা, গণগ্রেফতার: প্রতিবাদে সিনিয়র নেতাদের বিবৃতি
ঢাকার মহাসমাবেশ, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানায় নতুন গায়েবি মামলা ও হয়রানির ঘটনা ঘটেছে দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিএনপির এক ঝাঁক সিনিয়র নেতারা।
তাদের দাবি- নির্বাচনের আগে বিএনপিকে মাঠ ছাড়া করতে সরকার আবারও নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা ও গ্রেফতার করা শুরু করেছে। চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার করছে পুলিশ। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও আহবায়ক কমিটির সদস্য ইকবাল চৌধুরীসহ ৪০ জন নেতাকর্মীকে পুলিশী গ্রেফতার ও ঘরে ঘরে তল্লাশী চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিদাতা নেতারা হলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ঘরে ঘরে তল্লাশীর নামে হয়রানি করছে। চট্টগ্রামে পুলিশ এক প্রকার গণগ্রেফতার শুরু করে দিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কোতোয়ালী থানা শ্রমিক দলের সভাপতি সালেহ আহমদ, মহানগর যুবদল নেতা কুইন্টাল রিভেরিয়ো, বায়েজিদ থানা বিএনপি নেতা ফয়েজ আহমেদ, আমিন শিল্পাঞ্চল রউফাবাদ থেকে বিএনপি নেতা সালামত আলী ও তার ছেলে, ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি সোহেল ওসমান মামুন, সাবেক ছাত্রদল নেতা আরশে আজিম আরিফ, পতেঙ্গা থানা বিএনপি নেতা কাজী ইসমাইল, মো. ইকবাল, কাজী জিয়া উদ্দিন সোহেল, রামপুর ওয়ার্ড যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম, পাথরঘাটা ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জসিম উদ্দিন, পাথরঘাটা ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. মহিউদ্দিন, বাকলিয়া থানা হোটেল শ্রমিক রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদলের সভাপতি আবুল কালাম, বক্সিরহাট ওয়ার্ড যুবদল নেতা সেলিম খান, আনোয়ার হোসেন মানিক, ফয়সাল হোসেন মুন্না, ৩৮নং ওয়ার্ড বিএনপি'র অর্থ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন, বাগমনিরাম ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি মো. নাছির উদ্দীন, আলকরন ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. ফারুক, দক্ষিণ বাকলিয়া বিএনপি কর্মী জামাল উদ্দিন, আক্তার হোসেন, মো. রুবেল, মো. মানিক, পশ্চিম বাকলিয়া বিএনপির কর্মী মো. ফয়সাল, সাজ্জাদ হোসেন, পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন, মো. ইউনুস সহ ৪০ জনকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা কোন মামলার এফআইআরভুক্ত আসামী নন। তারপরও তাদেরকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। দলের বলিষ্ঠ নেতাকর্মীদেরকে বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর কারণ, তারা যাতে নির্বাচনের সময় মাঠে থাকতে না পারেন। গত বছর পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের তালিকা করেছে এখন সেই তালিকা ধরে ধরে নেতাকর্মীদের বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাসায় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। একদিকে নতুন গায়েবি মামলা ও অন্যদিকে পুরাতন গায়েবি মামলার চার্জ গঠন করে সাজা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।
নেতৃবৃন্দ নতুন করে গায়েবি মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি চট্টগ্রামে এইসব রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেফতার বন্ধ করে গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।