২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বরিশালে, বিভাগের অধিকাংশ উপজেলা বিদ্যুৎ বিভ্রাটে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ভারী বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে পড়লেও বরিশাল বিভাগের ওপর থেকে এর প্রভাব এখনও কাটেনি। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিদ্যুৎবিভ্রাটে খবর। তাছাড়া টানা ১৪ ঘণ্টারও বেশি সময় অবিরাম বৃষ্টি ঝরেছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বরিশালে, যা এই মৌসুমের রেকর্ড।
বিভাগের কোথাও প্রাণহানির খবর এখন পর্যন্ত না পাওয়া গেলেও বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে পরা, উপকূলে কিছু বসতবাড়ির ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসলের।
ঝালকাঠি জেলার বিনয়কাঠির কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, 'আমন ধানের ভালো ফলন হলেও মিধিলির বৃষ্টিতে জমির ধান শুইয়ে ফেলেছে। অগ্রহায়ণের শেষে ধান উঠতে শুরু করত। এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে ধানগাছ পানিতে শুয়ে পড়লে চিটা হবে। আমার এক বছরের পরিশ্রম সব পানিতে শোয়ায়ে দিয়ে গেল।'
বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের কৃষক রুস্তম আলী বলেন, খেতের পঞ্চাশ শতাংশ ধান চিটা হয়ে যাবে।
মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী উপজেলার মেঘনা তীরের ধানখেত তলিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী গ্রামের সোলায়মান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। এখন পৌর শহরে বিদ্যুৎ এলেও গ্রামের লাইনগুলোতে বিদ্যুৎ আসেনি।
অন্যদিকে বরগুনা পৌর শহরে বিদ্যুৎ থাকলেও উপজেলাগুলোতে নেই। ভোলায়ও একই অবস্থা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায় লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আশা করা যাচ্ছে আগামীকাল শনিবার থেকে স্বাভাবিক নিয়মে নৌযান চলাচল করবে।
আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৭৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত চলতি মৌসুমে রেকর্ড।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি বরিশালের বিভাগীয় উপপরিচালক মুরাদুল হাসান জানান, 'বিভাগের ৬ জেলা থেকেই খবর আসছে, বিভিন্ন স্থানে ধানগাছ নুয়ে পড়েছে, পানিতে ডুবে গেছে। কী পরিমানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা অনুমান করা এখনই সম্ভব না। ক্ষতির পরিসংখ্যান জানতে দুই-তিন দিন লাগবে।'