মিধিলির আঘাতে ৩২ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ঝালকাঠি, ভেঙেছে বেড়িবাঁধ
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলায় এক কিলোমিটারের বেশি বেড়িবাঁধ ভেঙে বিষখালী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ লাইনে গাছ পড়ে ছিঁড়ে গেছে তার। এতে ৩২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে পুরো জেলা।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলার উপজেলাগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিধিলির প্রভাবে একদিনেরও বেশি সময় টানা বৃষ্টিপাতে জেলার বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের খেত। কাঁঠালিয়া উপজেলায় গাছ উপড়ে পড়ে বেশ কয়েকটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ উপজেলার বিদ্যুতের লাইন ধারণকারী নয়টি খুঁটি ভেঙে ও হেলে গিয়ে তিন কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে উপজেলার কচুয়া ফিডের গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এদিকে বরিশাল শহরের উপকণ্ঠ জাগুয়ায় জাতীয় গ্রিডের ৩৩ কেভির সংযোগস্থলে পাঁচটি বিশাল আকৃতির চাম্বল গাছ পড়ে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঝালকাঠির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, রাত ৮টার মধ্যে সংযোগ দেওয়া যেতে পারে।
জেলার চার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলার বিভিন্ন আবাদি জমিতে গিয়ে দেখা গেছে আমন ধানের অধিকাংশই দমকা হাওয়ায় হেলে পড়েছে। আবার অনেক স্থানের আমন ধানের গাছ পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
কৃষক বাবুল জানান, 'বৃষ্টির ও বন্যার পানিতে আমাদের শীতকালীর সবজি চাষের জমিগুলোতে পানি জমে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।'
কৃষক দুলাল মোল্লা জানান, 'বৃষ্টি আর বাতাসে আমনের ধান মাটিতে পড়ে পানির নিচে তলিয়ে আছে। শীতকালীর সবজি চাষের জমিগুলোতে পানি জমে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।'
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি ও বাতাসে শুয়ে পড়া আমন ধানের তেমন বেশি ক্ষতির আশঙ্কা নেই। আমন আবাদে যেসব বীজের মাথায় ধান এসেছে, সেগুলো শুয়ে পড়েছে। কিন্তু এখনও বেশিরভাগ ধানে থোর পর্যন্ত হয়েছে, মাথায় ভার না হওয়ায় সেগুলো শুয়ে পড়বে না। জেলায় আনুমানিক ৫০০ হেক্টর পাকা উপসী আমন, ২০০ হেক্টর দুধকলম ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি জানান, জেলায় ১,৫৫০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে আনুমানিক ১১০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জেলায় ৩,৩০০ হেক্টর খেসারীর মধ্যে আনুমানিক ৭০০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর ৫০০ হেক্টর কলাবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।