বিএনপি নেতা নীরব-সোহেল-হেলাল-সপুর কারাদণ্ড
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ ৪৯ জন নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ ও মোহাম্মদ শেখ সাদী সোমবার (২০ নভেম্বর) এ রায় দেন। চারটি মামলায় তাদের এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে গত দুই মাসে ঢাকার আদালতে ২১টি মামলায় বিএনপির ২৬৫ জনের কারাদণ্ড হলো। আর বিগত এক বছরে ২৯টি মামলায় ২৯৯ জনের কারাদণ্ড হলো।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'সরকার একতরফা নির্বাচন করার জন্য এসমস্ত মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে। তারা একদিকে মুখে বলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার জন্য, অন্যদিকে বিএনপির "নির্বাচনে ইলেকটেবল" সারাদেশে প্রার্থীদের দেখে দেখে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার অপকৌশল নিয়েছে।
'মূলত আওয়ামী লীগ দেশে কোনো নির্বাচন চায় না, কারণ তারা জানে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ১০ আসনেও জিততে পারবে না। তাই তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে দমন-পীড়ন, আদালতকে দিয়ে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলার কাজে ব্যবহার করছে, বিভিন্নভাবে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখছে।'
রাজধানীর তেজগাঁও থানার নাশকতার মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ বিএনপির সাত কর্মীকে ২ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ এবং অনাদায়ে আরও সাত মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল এবং স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ ১৪ জনকে দেড় বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দণ্ডবিধি ১৪৩ ধারায় ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্যদিকে দণ্ডবিধি ৩২৩ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং তা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার দায়ে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় করা মামলায় এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোহেলের আইনজীবী জাকির হোসেন জুয়েল ও রফিকুল ইসলাম।
এছাড়াও রংপুরে নাশকতা মামলায় বিএনপির পাঁচজনের ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন রংপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ কোর্ট (১)।
২০১৩ সালের হরতালে রংপুরে নাশকতার উদ্দেশ্যে আনা ৫৬টি চকলেট বোমা উদ্ধার মামলায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডনসহ দলটির আরও চারজনের নেতাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২০ নভেম্বর) সকালে এ রায় দেন করেন রংপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ কোর্ট (১)-এর বিচারক কৃষ্ণ কান্ত রায়। ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি এড. আব্দুল সাত্তার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিত অপর ৪ আসামি হলেন: রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহির আলম নয়ন ও জেলা যুবদলেরসহ সভাপতি তারেক হাসান সোহাগ ও যুবদল কর্মী আরিফ হোসেন।
এর আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান (হাবীব), ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল আলিম (নকি), বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের সাজা হয়েছে।